ক্যারিয়ার

কপিরাইটার হতে চাইলে যা জানা দরকার

কপিরাইটার হতে চাইলে যা জানা দরকার

লেখালেখি করে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাদের জন্য অন্যতম পছন্দ হতে পারে কপিরাইটিং। অল্প কথায় বেশি কাজ– এই বোধহয় হওয়া উচিত কপিরাইটিংয়ের মূল মন্ত্র। 

কোনো বিষয়কে অতিমাত্রায় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ নয় বরং একটি পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে সবচেয়ে কম শব্দে সেটিকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করাই কপিরাইটিংয়ের উদ্দেশ্য। কপিরাইটিং জগতের মূলকথা এক হলেও ধরনে রয়েছে ভিন্নতা। এক নজরে সেগুলো দেখে নেওয়া যাক–

ই-কমার্স কপিরাইটিং

একে বি-টু-বি বা বিজনেস টু বিজনেস কপিরাইটিংও বলা চলে। নির্দিষ্ট পণ্য বা ক্যাটাগরি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা প্রদান, কোম্পানির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত কিন্তু খুঁটিনাটি বর্ণনা এবং কাস্টমার সেবা সংক্রান্ত তথ্য– এই সবই এ ধরনের কপিরাইটিংয়ের অন্তর্ভুক্ত। মূলত ই-কমার্সের ছাতার নিচে আসা যেকোনো বিষয়ে লেখাকেই এ আওতায় আনা যায়।

ওয়েবসাইট কপিরাইটিং 

কোনো ওয়েবসাইটে ঢোকার পর প্রথমেই যে দুটো জিনিস চোখে পড়ে, তা হচ্ছে এর গ্রাফিকস এবং হোমপেজের লেখাগুলো। মিশন, ভিশন বা পরিচিতিমূলক ট্যাগলাইনের মতো এই লেখাগুলোই একটি ওয়েবসাইটকে এর ব্যবহারকারী বা সম্ভাব্য ব্যবহারকারীদের সামনে তুলে ধরে। এটা অনেকটা কোনো সিনেমার পোস্টার বা বইয়ের প্রচ্ছদের মতো। প্রথম পরিচয়ের এই বার্তাগুলোর পেছনেও থাকেন কপিরাইটাররা। 

এ ছাড়া একটি ব্র্যান্ড সম্পর্কে সংবাদ, প্রতিবেদন ইত্যাদিও ব্র্যান্ডকে সবার সামনে তুলে ধরে। কোনো ব্র্যান্ডের নিজস্ব গল্প, তাদের দলের মিথস্ক্রিয়া ইত্যাদি সম্পর্কে লেখা বা ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে একটা প্রাথমিক দেবার এই কাজটিই হচ্ছে ওয়েবসাইট কপিরাইটিং। এর জন্য প্রয়োজন হয় একজন কপিরাইটারের সেই নির্দিষ্ট ব্যবসার বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা এবং অবশ্যই লেখালেখির প্রতিভা। 

বিজ্ঞাপন 

কপিরাইটিংয়ের সবচাইতে বড় বাজার এই বিজ্ঞাপন। বহুদিন আগের গুনগুন করে গাওয়া বিজ্ঞাপন জিঙ্গেল বা হাসিঠাট্টায় মনে থেকে যাওয়া 'আমার নাম মফিজ, ভাড়া হইছে তিরিশ'-এর মতো কোনো লাইন একেকটি পণ্যকে আমাদের কাছে স্মরণীয় করে রাখে। পর্দায় উঠে আসা এই গান, ক্যাচফ্রেজ সংলাপ বা পুরো বিজ্ঞাপনের কাহিনী যাদের উর্বর মস্তিষ্কপ্রসূত– তারা মূলত বিজ্ঞাপনের কপিরাইটার। এই কাজে আগ্রহ থাকলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া দিতে পারেন, আবার ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও এ কাজে নিজের হাতেখড়ি করা যায়। 

এসইও কপিরাইটিং 

ডিজিটাল মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো এতশত ব্লগ, আর্টিকেল ঠিক কীভাবে পাঠকদের কাছে পৌঁছায়? এর পেছনে কাজ করে এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তিই নির্ধারণ করে দেয় গুগলে কোনো কিওয়ার্ড সার্চ করার পর কোন লেখাটা সবচেয়ে উপরে থাকবে, আর কোন লেখাটা একেবারে চোখেই পড়বে না। দক্ষভাবে চর্চার পর নিজস্ব লেখক প্রতিভার পাশাপাশি কপিরাইটাররা এই বিষয়েও পারদর্শী হতে পারেন। 
লেখার মধ্যে সর্বোচ্চ সম্ভাব্য কিওয়ার্ডগুলো খুব সহজেই পুরে দেন, যাতে তা আকর্ষণ করতে পারে সর্বোচ্চ সংখ্যক পাঠক বা অডিয়েন্সকে। এভাবে নিজের লেখাকে সবচেয়ে বেশি 'জরুরি' করে তোলার বিষয়টিই হচ্ছে আলাদা করে এসইও কপিরাইটিং। ডিজিটাল কোর্স বা নিজে থেকেও এসইও সম্পর্কে শিখে এ কাজে আসা যায়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কপিরাইটিং

অনলাইনে কেনাবেচা শুধু নয়, প্রচার-প্রসারের পথও এখন সবচেয়ে বেশি প্রশস্ত। তাই প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই চায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মুখর পদচারণা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিকভাবে অন্তত একটি পেজ থাকে, যা নিয়মিত পরিচালনা করতে হয়। সেসব পেজের দৈনন্দিন পোস্টের পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন হয় প্রচারণার কৌশল আর সেই কৌশলের কুশলী হচ্ছেন একজন কপিরাইটার। কোন ছবিটা দেওয়া হবে, এর সঙ্গে কী লেখা থাকবে– কোন হ্যাশট্যাগে কোন দিন উদযাপন করা হবে, এমন সব ধারণাসহ মূলত সেই প্রতিষ্ঠানের একটি 'ছবি' তৈরি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে কপিরাইটিং। 

শুধু প্রচারের যথাযথ কৌশলের অভাবে অনেকসময় প্রতিষ্ঠানের সামাজিক মাধ্যমে উপস্থিতি মলিন হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন একজন দক্ষ কপিরাইটারের। 

কপিরাইটিং পেশায় যেন প্রতিভা আর পুঁজি– এই দুয়ের সম্মিলন ঘটে। নিজের লেখালেখিকে করপোরেট ধাঁচে ফেলে দেখতে চাইলে এই পেশা বেশ উপযোগী হবে। 

তথ্যসূত্র: এমইউও, স্মার্টব্লগার 
 

Comments

The Daily Star  | English
Israeli strikes on Iran 2025

Israel launches major attack on Iran: what we know so far

‘Nuclear plant, military sites’ hit; strikes likely killed Iranian chief of staff, top nuclear scientists; state of emergency declared in Israel, fearing Iranian retaliation

5h ago