বাম সংগঠন করায় ঢাবি শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাত্রলীগের, বাবা-মাকে ডেকে আনার অভিযোগ

ছাত্রলীগ না করে বামপন্থী সংগঠন করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে মধ্যরাতে ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের ২ নেতার বিরুদ্ধে।

এমনকি মধ্যরাতেই ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে ফোন দিয়ে ক্যাম্পাসে এসে তাদের ছেলেকে নিয়ে যেতে বলেছেন তারা।

আজ মঙ্গলবার ভোররাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।

মধ্যরাতে ছেলে সম্পর্কে এ খবর পেয়ে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে সকালে বগুড়া থেকে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও মা ক্যাম্পাসে চলে আসেন। মায়ের কান্না দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই শিক্ষার্থীও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হল ছাত্রলীগের দখলে। অন্য কোনো সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হলে থাকতে দেয় না ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনও এ বিষয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামির সাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ২২৩ নম্বর রুমে থাকেন তিনি।

অন্য দিকে অভিযুক্ত ২ ছাত্রলীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আহম্মদ উল্লাহ এবং পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক রিজভী। সামির তাদের রুমমেট।

সামির সাদিক ঘটনার বর্ণনা দিয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, প্রথম বর্ষ থেকে তিনি হলে থাকেন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত। তিনি ছাত্র ফেডারেশন করেন, বিষয়টি ছাত্রলীগের নেতারা জানতেন না। গতকাল হঠাৎ ছাত্র ফেডারেশনের কিছু বই দেখে তার রুমমেট আহম্মদ উল্লাহ ও রিজভী তাকে রাত ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময়ে তার বাবাকে ফোন করে ক্যাম্পাসে এসে তাদের ছেলেকে নিয়ে যেতে বলেন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মধ্যরাতে বাবা-মা আমার এ অবস্থার খবর শুনে সারা রাত ঘুমাতে পারেননি। ভোরে বগুড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারা। সকালে ক্যাম্পাসে আসেন। আমাকে দেখে মা কান্নায় ভেঙে পড়েন।'

অভিযোগটি অস্বীকার আহম্মদ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। সামিরের পরিবারকে আমি ঘটনাটি জানাইনি। রুমে অন্য যারা ছিল, হয়তো তারাই জানিয়েছে। আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ জন্য আমাদের নামে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সামিরের কাছে ছাত্র ফেডারেশনের বই দেখে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। তার সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করা হয়নি।'

এ বিষয়ে রিজভীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সামির জানান, বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষকে অবগত করা হয়েছে এবং তিনি লিখিত অভিযোগ দেবেন।

সামিরের বাবা এমতাসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত পৌনে ১টার দিকে আহম্মদ উল্লাহ নামে পরিচয় দিয়ে আমাকে কল করেছে। কল করে বলেছে, আপনার ছেলে নিষিদ্ধ সংগঠন করে। তার কাছে বই পাওয়া গেছে। হলের রাজনৈতিক বড় ভাইরা জানতে পারলে তাকে মেরে পুলিশে দেবে। দ্রুত ক্যাম্পাসে এসে তাকে নিয়ে যান।'

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত আছি। লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবো।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP struggles to rein in the rogues

Over the past 11 months, 349 incidents of political violence took place across the country, BNP and its affiliated organisations were linked to 323 of these

8h ago