খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সাময়িক স্থগিত

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তর দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
 খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সাময়িক স্থগিত
খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সাময়িক স্থগিত। ছবি: স্টার

খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তর দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, 'রোগীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এবং কিছু যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা সাময়িকভাবে কর্মবিরতি স্থগিত করছি।'

তিনি বলেন, 'খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এসে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখে গেছেন। সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাই রোগীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে আমরা সাময়িকভাবে ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।'

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও বিক্ষোভ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। 

শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবির মধ্যে ছিল- ১৬ আগস্ট সকাল ১০টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবনে কমপক্ষে দুটি মডেল ফার্মাসি স্থাপন ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা। 
এরমধ্যে দ্বিতীয় দাবিটি গতকাল দুপুরে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম‌।

গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ওষুধ কেনাকে কেন্দ্র করে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী ও ৯ ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হন। তাদের মধ্যে ৩ শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর ছিল।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মবিরতি শুরু করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, হাসপাতালের সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রাখেন।

আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় গতকাল সকালে মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালক ও উপ-পরিচালকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে মেডিকেল কলেজ চত্বরে দিনভর বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করেন যে তাদের ৩ দফা দাবি মেনে না নেওয়া হলে আজ দুপুর ১২টা থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন তারা।

শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি ছিল—১৬ আগস্ট সকাল ১০টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবনে কমপক্ষে ২টি মডেল ফার্মাসি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা।

এরমধ্যে দ্বিতীয় দাবিটি গতকাল দুপুরে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম‌।

ওই সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, হাসপাতালের সামনের বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে ওষুধ কিনতে যান প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। কিন্তু ওই দোকান থেকে ওষুধটির দ্বিগুণ দাম চাওয়া হয়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন দোকানের কর্মচারীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী হোস্টেলে এসে অন্যদের ব্যাপারটি জানান।

তাদের অভিযোগ, কয়েকজন শিক্ষার্থী কেন ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে তা জানতে দোকানে গেলে অন্য ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে বিভিন্ন বর্ষের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

 

Comments