শিক্ষার্থী-ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ

খুমেক অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ-হাসপাতাল পরিচালক ও উপপরিচালকের কক্ষে তালা

সংঘর্ষের পর দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা
খুমেক অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালক ও উপপরিচালকের কক্ষে তালা
খুমেক শিক্ষার্থী-ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের পর দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা। ছবি: স্টার

দাবি আদায়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আজও বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছেন খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) শিক্ষার্থীরা। 

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মেডিকেল কলেজ ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা ওই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। 

এখনো কাজে ফেরেননি ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে হাসপাতালের সামনের সব ওষুধের দোকান। 

আজ দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে ওই সময়ের পর থেকে জরুরি বিভাগের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে রাতে ২ আসামি গ্রেপ্তারের পর আমরণ অনশন কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন তারা।

এখনো খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালক ও উপপরিচালকের কক্ষে তালা ঝুলছে। গতকাল বুধবার তাদের কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের ৩টি দাবির মধ্যে মাত্র একটি দাবি পূরণ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্য দুটি দাবির প্রথমটি ছিল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার। প্রশাসন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা শুরু করেছে, তবে মূল আসামিরা থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অন্যদিকে ক্যাম্পাসের মধ্যে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের যে দাবি তারা করেছিলেন তার ব্যাপারে কেউ কোনো আলোচনা করেননি। এ কারণে তারা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন।

এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
 
বুধবার গভীর রাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে করা অভিযোগটি বুধবার বিকেলে মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ।

গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ওষুধ কেনাকে কেন্দ্র করে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী ও ৯ ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হন। তাদের মধ্যে ৩ শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর ছিল।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মবিরতি শুরু করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, হাসপাতালের সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রাখেন।

আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় গতকাল সকালে মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও হাসপাতালের পরিচালক ও উপ-পরিচালকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে মেডিকেল কলেজ চত্বরে দিনভর বিক্ষোভ করেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা করেন যে তাদের ৩ দফা দাবি মেনে না নেওয়া হলে আজ দুপুর ১২টা থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন তারা।

শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি ছিল—১৬ আগস্ট সকাল ১০টার মধ্যে হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করা, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের মাল্টিপারপাস ভবনে কমপক্ষে ২টি মডেল ফার্মাসি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা।

এরমধ্যে দ্বিতীয় দাবিটি গতকাল দুপুরে বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন হাসপাতালের পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম‌।

ওই সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, হাসপাতালের সামনের বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে ওষুধ কিনতে যান প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। কিন্তু ওই দোকান থেকে ওষুধটির দ্বিগুণ দাম চাওয়া হয়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন দোকানের কর্মচারীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী হোস্টেলে এসে অন্যদের ব্যাপারটি জানান।

তাদের অভিযোগ, কয়েকজন শিক্ষার্থী কেন ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে তা জানতে দোকানে গেলে অন্য ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। এতে বিভিন্ন বর্ষের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

4h ago