নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে পবিপ্রবি উপাচার্য-রেজিস্ট্রারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সেকশন অফিসার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।

ওই নিয়োগ বাতিল চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার পটুয়াখালী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলাটি করেন শাহানা সুলতানা ও মোসা. হেলেনা বেগম।

বাদীপক্ষের আইনজীবী হুমায়ূন কবির বাদশা বলেন, 'বাদী মামলা করার পর আদালত আসামিদের সমন নোটিশ দিয়েছেন।'

মামলায় আসামি করা হয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু, ট্রেজারার অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান।

এর আগে একই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেয় এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি বিষয়টি তদন্ত করছে।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর তিন জন সেকশন অফিসারসহ অন্যান্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দপ্তর। সেকশন অফিসার পদের জন্য মামলার বাদী—দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহানা সুলতানা ও হেলেনা বেগম আবেদন করেন। ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর বাদীদের সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হলে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সাক্ষাৎকার দেন।

এতে আরও বলা হয়, পবিপ্রবি কর্তৃপক্ষের গঠিত নিয়োগ কমিটি প্রকৃত মেধাবীদের বাছাই না করে স্বজনপ্রীতি করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছেলে শাওন চন্দ্র সামন্ত তনু, উপ-রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন বাদলের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা, পবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েলের ভাই মো. আরিফুর রহমান পিয়েল, পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের ভাই মো. হাফিজুর রহমান, দুমকি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালামের ছেলে তানভীর হাসান স্বাধীন এবং জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রী তাকছিনা নাজনীনকে নিয়োগের সুপারিশ করে।

পরবর্তীতে ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডের সভায় তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়। সেকশন অফিসার পদে বিজ্ঞপ্তিতে চার জন নিয়োগের কথা থাকলেও নিয়োগ কমিটি ছয় জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে।

মামলায় আরও বলা হয়, সেকশন অফিসারসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এ প্রক্রিয়ার কারণে মামলার বাদী উপযুক্ত প্রার্থী হয়েও নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে পবিপ্রবির রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু বলেন, 'মামলা হয়েছে কি না, সেটা বলতে পারব না। এখনো আমরা কোনো কাগজপত্র পাইনি।'

উপাচার্য অধ্যাপক স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, 'আমাদের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন যে মামলা হয়েছে। তবে এখনো মামলার কোনো কাগজ পাইনি। মামলা হলে অবশ্যই দাপ্তরিকভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।'

গত ২৭ ডিসেম্বর পবিপ্রবিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে উপাচার্যের ছেলেসহ ৫৮ জনকে নিয়োগের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

পরবর্তীতে ইউজিসিকে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ জানুয়ারি ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিতে ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসে সরেজমিন তদন্ত সম্পন্ন করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

3h ago