কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের মামলা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার রাতে খানজাহান আলী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

কুয়েটের নিরাপত্তা পরিদর্শক মনিরুজ্জামান লিটন ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জনকে অভিযুক্ত করেছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, উত্তেজিত জনতা লাঠি ও ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অবৈধভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধোর করার পাশাপাশি সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি করে।

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে কুয়েটের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার ঘটনার পরপরই উপাচার্য শিক্ষার্থীদের পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান ও সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। বিলম্ব না করে তিনি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান ও প্রভোস্টদের নিয়ে জরুরি সভা ডাকেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই হামলাকারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং বেশ কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান এবং সহিংসতা প্রশমনের চেষ্টা করেন। এ সময় উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক, অনেক শিক্ষার্থী ও কর্মচারী আহত হয়ে কুয়েট মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নেন।

গত মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ক্যাম্পাসে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে এই সহিংসতায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

সে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো—কুয়েট ক্যাম্পাসে রাজনীতিতে যুক্ত কেউ থাকলে তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি, সংঘর্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা ও বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বাইরে সামরিক বাহিনীর টহল নিশ্চিত করা, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় মেটানো এবং ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ।

কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় গতকাল শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ দফা দাবির পুরোটা পূরণ না হওয়ায় কুয়েটের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।

এই তিন পদে নতুন নিয়োগের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে লিখিত আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় ক্যাম্পাসে দুর্বার বাংলা প্রাঙ্গন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও সন্ত্রাসীদের লাল কার্ড প্রদর্শনের কর্মসূচি পালন করার কথা আছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Step up diplomacy as US tariff clock ticks away

Bangladesh must intensify trade diplomacy to protect garment exports from steep US tariffs as the clock runs down on a three-month reprieve, business leaders warned yesterday.

6h ago