হল ছাড়ছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা

হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের জেরে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার পর হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা।

কুয়েট প্রশাসন বলছে, আজ বুধবার সকাল থেকে কুয়েটের সাতটি হলের তিন হাজারের মতো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন।

বেলা পৌনে ১২টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিছু শিক্ষার্থী হল না ছাড়লেও, কিছুক্ষণের মধ্যে তারাও চলে যাবেন বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে, কুয়েটের সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই ঘোষণার পর উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ হল না ছাড়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। তাদের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক। তাই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আজ বুধবার সকালে কর্মসূচি দেন তারা।

তবে আজ সকাল ১১টা পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি।

কুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. আনিচুর রহমান ভূঞা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুসারে আজ সকাল দশটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দেয়া ছিল। প্রায় সব শিক্ষার্থী হল ছেড়ে গিয়েছে। কেউ কেউ সামান্য অসুবিধার জন্য যেতে না পারলেও হয়তো কিছু সময়ের মধ্যে চলে যাবে। আর যদি কেউ যেতে না চায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

তবে ১১টার দিকে কয়েকটি হল ঘুরে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখা গেছে। এর ভেতর অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তারা কোনোভাবেই হল ছাড়বেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যতোই কঠোর হোক না কেন, ভিসির পদত্যাগ ছাড়া তারা ক্যাম্পাস ছাড়বেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমাদের ওপর যে নৃশংস আক্রমণ হয়েছে তাতে প্রত্যক্ষভাবে ভিসি ইন্ধন ছিল। তিনি কোনভাবে এর দায় এড়াতে পারেন না। তাকে পদত্যাগ করতেই হবে।'

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আজহার উদ্দিন বলেন, 'হঠাৎ হল ছাড়ার নোটিশে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার দুটো টিউশনি আছে। মাসের শেষ। সব মিলায়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি।'

এদিকে খান জাহান আলী হল, অমর একুশে হল ও লালন শাহ হলে গিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাদের কেউ কেউ বলেন, পরিস্থিতি বুঝে তারা হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি হল ছাড়তে বাধ্য করে তাহলে ক্যাম্পাসের বাইরে কোথাও থাকবেন। পরে আন্দোলনে যোগ দেবেন।

কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বহিরাগতদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমে পাঁচ দফা ও পরে ভিসি'র পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

ওইদিন বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন। একইদিন জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ দাবি মেনে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তাতে আন্দোলন প্রশমিত হয়নি। ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপিও দেন তারা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Pakistan postpones foreign minister's visit to Bangladesh

The development comes amid escalation of tension between India and Pakistan following a terrorist attack

44m ago