চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাউন্ড স্টেশন, ১১ স্যাটেলাইট থেকে মিলবে তথ্য

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হলো স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা ও গবেষণাসহ বাংলাদেশে উন্নত সমুদ্র গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চবিতেই প্রথম স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন চালু হলো। এতে কারিগরি সহায়তা করেছে চীনের জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেকেন্ড ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফি।

আজ বুধবার চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান ও উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়রিং কোম্পানি থেকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. ওয়াং দা এবং এমডি মাহমুদ হুসেইন খান।

সূত্র জানিয়েছে, এই প্রকল্পে প্রায় ১০০ কোটি টাকা মতো ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে কারিগরি ও যন্ত্রপাতি সহায়তায় ৫০ কোটি টাকা দিয়েছে চায়না কোম্পানি সেকেন্ড ইনস্টিটিউট অফ ওশানোগ্ৰাফি (এসআইও)।

প্রায় ১১টি স্যাটেলাইট থেকে এই গ্রাউন্ড স্টেশন সংযোগ পাবে। আবহাওয়া পরিবর্তন, ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার পূর্বাভাস, বন উজার, নদী ভাঙন—সব তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে পাওয়া যাবে।

এখান থেকে স্যাটেলাইট রিসোর্স নিয়ে চাইলে গবেষণা করা যাবে।

গবেষকরা বলছেন, যেসব স্যাটেলাইট বে অব বেঙ্গলের উপর দিয়ে যাবে, সেসব স্যাটেলাইট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ে গবেষণার কাজে লাগানো যেতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে, গ্রাউন্ড স্টেশনে ২২৪ টেরাবাইটের স্টোরেজ স্থাপন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনটি মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউট অনুষদের পাশে একটি জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। এর দায়িত্বে থাকবেন সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও প্রজেক্ট সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কাজ হলো গবেষণাকে উন্নত করা। দেশের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের গবেষণা সক্ষমতা নেই। আমার মূল টার্গেট ছিল গবেষণার সক্ষমতা তৈরি করা। এর পেছনে আমার সাত বছরের শ্রম রয়েছে। এই স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশনের ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডাটা পাওয়া যাবে। শিক্ষার্থীরা এই সুবিধাগুলো ভোগ করতে পারবে। গবেষণার কাজেও যুক্ত থাকতে পারবে। আমরা যখন ঘূর্ণিঝড়ের কোনো তথ্য পাই, তখন সেখানে লেখা থাকে নাসা থেকে প্রাপ্ত তথ্য। আর এক বছর পর হয়তো আপনারা শুনতে পাবেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য।'

সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অহিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এর আগে আমরা যে গবেষণাগুলো করতাম বা ফ্রি স্যাটেলাইটের যে তথ্যগুলো পেতাম, সেখানে অনেকটা তথ্যের ঘাটতি থেকে যেত। স্যাটেলাইট স্টেশন স্থাপনের ফলে এখান থেকে আমরা যে ডাটাগুলো পাব, সেখানে তথ্যের কোনো ঘাটতি থাকবে না। এছাড়া, দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এখান থেকে ডাটা সংগ্রহ করতে পারবে।'

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করেছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার ও সেকেন্ড ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফির প্রধান অধ্যাপক ড. ফ্যাং ইংজিয়া।

Comments

The Daily Star  | English

Shutdown is another economic peril

Vowing to continue an indefinite work stoppage and stage a protest march on tax offices, the NBR Reform Unity Council has intensified its demands

8h ago