প্রশাসনিক ভবনে 'নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন' লিখে চবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

এর মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে 'নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন' লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

তারা বলেন, আমরা জেনেছি, আজ প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। এদিকে গতকাল (শুক্রবার) দেখেছি, একজন রাজনৈতিক নেতা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিদার বলেছেন। এ জন্য আমরা প্রশাসনিক ভবনের নাম মুছে 'নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন' লিখে দিয়েছি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে আজকে আমাদের কর্মসূচি ছিল প্রতিবাদী গ্রাফিতি অঙ্কন।'

'সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী স্যার আপত্তি জানিয়েছিলেন, তবুও আমরা প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি,' বলেন তিনি।

গ্রাফিতি অঙ্কন কর্মসূচিতে অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জোবরা গ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমির বলেন, 'আমরা হচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক, আমরা জমিদার। জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা কি আমরা মেনে নিতে পারি? কখনো না। আমরা অতীতেও মেনে নেইনি, সামনেও মেনে নেব না।'

তিনি বলেন, 'এই বিশ্ববিদ্যালয়টা হচ্ছে আমাদের বুকের ওপর। আমরা হচ্ছি এই জায়গার মালিক। এ জন্য আমরা অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদেরকে সম্মান করতে হবে। সম্মান দেওয়ার মতো পরিবেশ আমরা করে দেবো, বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তাহলে আমরা জনগণকে নিয়ে যেটা করা দরকার সেটা ইনশাআল্লাহ আমরা সামনে করব।'

শুক্রবার রাতে তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট, এ এফ রহমান হল ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে সমবেত হয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানান।

এরপর সমালোচনার মুখে সিরাজুল ইসলাম তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমি ইতোমধ্যে আমার বক্তব্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছি।'

বিষয়টি নিয়ে চবি প্রক্টর ড. কোরবান আলী বলেন, 'আমি তাদের (শিক্ষার্থীদের) জিজ্ঞাসা করতে গিয়েছিলাম যে কেন তারা এটি করছে? তারা জানালো, প্রশাসন তাদের কোনো কথা শোনেনি। তাই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা এটি লিখেছে।'

Comments