পাইলটিং ছাড়াই প্রাথমিক শিক্ষাক্রম চালু

প্রাথমিক বিদ্যালয়
স্টার ফাইল ফটো

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা যথাসময়ে শিক্ষকদের গাইড প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হওয়ায় কোনো ধরনের পাইলটিং ছাড়াই প্রাথমিক পর্যায়ে নতুন পাঠ্যক্রম চালু করছে সরকার।

শিক্ষাক্রমে কী ধরনের পরিবর্তন আসছে, সে সম্পর্কে শিক্ষকদের জানানো এবং সেটা শ্রেণিকক্ষে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, তা তাদের অবহিত করার জন্য পাঠ্যক্রমের পাইলটিং প্রয়োজন।

শিক্ষার্থীরা নতুন উপকরণ ও শিক্ষা পদ্ধতি বুঝতে পারে কি না, তা জানতেও এটি সহায়তা করবে।

গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক অনুমোদিত নতুন কারিকুলামে মুখস্থ শিক্ষাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং এটি শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেবে। এই ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে আনন্দদায়ক পরিবেশে পরীক্ষা-নিরীক্ষা নির্ভর ও কার্যক্রম ভিত্তিক শিক্ষা দেবে।

গত বছরের জানুয়ারিতে নতুন পাঠ্যক্রমের পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মহামারির কারণে তা ২ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়।

ফেব্রুয়ারি থেকে ৬২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের নতুন পাঠ্যক্রমের পাইলটিং চলছে।

কিন্তু, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষক-নির্দেশনা মুদ্রণের জন্য অর্থ বরাদ্দ বিলম্বিত হওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে তা শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে এনসিটিবির প্রাথমিক পাঠক্রমের ২ সদস্য জানিয়েছেন।

এনসিটিবির প্রাথমিক পাঠ্যক্রমের সদস্য এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, 'আমরা এপ্রিলে অর্থ পেয়েছিলাম। কিন্তু, এর পরপরই রমজান এলো। তাই আমরা সময়মতো প্রক্রিয়াটি শুরু করতে পারিনি।'

বাংলাদেশে এ বছরের ২ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত রমজান পালন করা হয়।

এনসিটিবি এখন ২০২৩ সাল থেকে ৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাইলটিং শুরু করার লক্ষ্য হাতে নিয়েছে বলে জানান তিনি।

সাধারণত, প্রথম বছরে প্রকাশিত পাঠ্যপুস্তকগুলোকে পরীক্ষামূলক সংস্করণ বলা হয়। পরের বছর মুদ্রণের সময় প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হয়।

তাই প্রয়োজনে বইগুলো সংশোধন করার সুযোগ থাকবে বলেও জানান রেজাউল হাসান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, 'আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু, শিক্ষকদের নির্দেশিকা প্রস্তুত ছিল না।'

সীমিত সংখ্যক শিক্ষার্থীর ওপর পাইলটিং করা যেত এবং এনসিটিবি সেই ফিডব্যাক নিয়েই কাজ করতে পারত বলে মনে করেন ঢাকার শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসান।

কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটির সদস্য তারিক আহসান আরও বলেন, 'এটি এখন একটি চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ, দেশজুড়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওপর পাইলটিং করার কথা ছিল।'

২০১৮ সালে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করে।

নতুন পাঠ্যক্রমের অধীনে দশম শ্রেণির আগে কোনো সরকারি পরীক্ষা হবে না এবং তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না।

এই পাঠ্যক্রমের আওতায় নবম শ্রেণির পরিবর্তে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায়িক শিক্ষা চালু করা হবে।

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবং পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক এই শিক্ষাক্রমের নতুন বই পাবে।

দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ২০২৪ সালে এবং পঞ্চম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বই পাবে।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

14h ago