বই উৎসব: উপজেলায় পৌঁছেছে প্রাথমিকের ৬৯ ও মাধ্যমিকের ৮০ শতাংশ বই

সারা দেশে স্কুলগুলোতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব উদযাপন করা হবে আজ রোববার। তবে, কাগজের উচ্চ মূল্য এবং বই ছাপার কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়ায় চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে অনেক শিক্ষার্থী নতুন বইয়ের সম্পূর্ণ সেট পাবে না।
শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রস্তুত বই। ছবি: স্টার ফাইল ছবি

সারা দেশে স্কুলগুলোতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উৎসব উদযাপন করা হবে আজ রোববার। তবে, কাগজের উচ্চ মূল্য এবং বই ছাপার কার্যাদেশ দিতে দেরি হওয়ায় চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিনে অনেক শিক্ষার্থী নতুন বইয়ের সম্পূর্ণ সেট পাবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উদ্বোধন করেছেন। গতকাল সকালে নিজ কার্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে তিনি এই কার্যক্রম শুরু করেন।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার ৪ কোটি ২৭ লাখ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেবে ৩৫ কোটি ১৬ লাখ পাঠ্যপুস্তক।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রাথমিকের ১০ কোটি পাঠ্যপুস্তকের ৬৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের প্রায় ২৪ কোটি পাঠ্যপুস্তকের ৮০ শতাংশ উপজেলায় পৌঁছেছে। এসব বিতরণ শুরু হলেও সার্বিক পরিস্থিতিতে সব শিক্ষার্থী সময়মতো তাদের বই হাতে পাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান ফরহাদুল ইসলাম বলেন, 'বেশ কিছু জায়গায় প্রথম দিনে কিছু শিক্ষার্থী পুরো সেই বই পাবে না। তবে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের সময় স্কুলে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থী নতুন বই পাবে।'

তিনি বলেন, 'এই দেরির কারণে খুব বেশি সমস্যা হবে না। কারণ সব শিক্ষার্থী বই নিতে স্কুলের প্রথম দিনে উপস্থিত হয় না।'

তিনি জানান, ১০ জানুয়ারির মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সব পাঠ্যপুস্তক উপজেলায় পৌঁছে যাবে।

কাগজের সংকট ছাড়াও প্রাথমিক পাঠ্যপুস্তক ছাপার দরপত্র পাওয়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এনসিটিবির সঙ্গে চুক্তি করেনি এবং এর কারণেও কিছুটা দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান।

তিনি বলেন, 'এই প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ না করলে আমাদের দ্বিতীয় দরদাতাকে কাজ দেওয়ার পদ্ধতিতে যেতে হবে।'

প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়। মাধ্যমিকের বইয়ের তুলনায় কম পৃষ্ঠা থাকায় অল্প সময়ের মধ্যেই এত বেশি প্রাথমিকের বই ছাপা সম্ভব হয়।

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক উৎসবে যোগ দেবেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

আগে সরকার শুধুমাত্র প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দিতো। বই কিনতে ভোগান্তিতে পড়তে হতো নিম্ন আয়ের পরিবারের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের।

২০১০ সাল থেকে সরকার প্রাথমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরেও বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করে আসছে।

এই উদ্যোগ নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩০ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।

এই সাফল্যের ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী তালিকাভুক্তির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমেছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি কর্মকর্তারা।

Comments