‘কিছুই করি নাই’ শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দেশকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও বলবে আমরা নাকি কিছুই করি নাই। কিছুই করি নাই শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না।

আজ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত প্রাক-প্রাথমিক, প্রথমিক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা যে এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এটা দুঃখজনক জাতির জন্য। ৯৬ সালে আমরা আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করি। তখন আমরা উদ্যোগ নেই, আমরা আবার নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করি। স্বাক্ষরতার হার বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। বয়স্কদের শিক্ষার ব্যবস্থাও সেখানে সংযুক্ত ছিল।

সরকার গঠন করার পর থেকে আমাদের লক্ষ্য ছিল, জনগণকে যদি দারিদ্র্যমুক্ত করতে হয় তাহলে শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। কাজেই সমগ্র জাতিকে আমরা শিক্ষিত করে গড়ে তুলবো সেই পদক্ষেপ নেই। আমরা নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করি। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কারণ আমাদের ৫ বছরের সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ২০০১-এ বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর তারা নতুন আরেকটা করবে...কী কী করে জানি না। তারা দেশকে আবার অন্ধকারের দিকেই ঠেলে দেয়। এটা হলো বাস্তবতা, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আরেকটা অন্ধকার যুগ আমাদের জীবনে চলে আসে। ২০০৮-এর নির্বাচনে নৌকা মার্কায় মানুষ ভোট দেয়, আমরা আবার সরকার গঠন করি। তখন থেকে আমাদের আবার লক্ষ্য হয়, কীভাবে আমরা এ দেশের মানুষকে নিরক্ষরতামুক্ত করবো এবং ২০১০ সাল থেকে আমরা বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু করি। যেটা স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও জাতির পিতা করেছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা এটা শুরু করে দিয়েছি। এখন প্রতি বছরই বই উৎসব পালিত হচ্ছে।

এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, এই করোনা, নানা ঝামেলা, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ...এখন তো সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। সারা বিশ্বব্যাপী কষ্ট, তার মধ্যেও কিন্তু আমরা শিশুদের কথা ভুলিনি। তাদের বই ছাপানোর খরচাটা...অন্য দিক থেকে আমরা সাশ্রয় করছি, বই ছাপানোর দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা অর্থাৎ প্রযুক্তি শিক্ষা। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা কেন পিছিয়ে পড়ে থাকবে!

প্রায় ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থী এখন স্কুলে যায় জানিয়ে তিনি বলেন, অভিভাবকের মধ্যে সচেতনতা এসেছে যে, ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া শেখাবো। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা।

করোনার সময় থেকে এ পর্যন্ত আমার ঘরে আমার স্কুল, অর্থাৎ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ কাজেই ঘরে বসে পড়াশোনা। কেউ যাতে পড়াশোনায় ফাঁকি দিতে না পারে সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। সংসদ টিভির মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে শিক্ষা কার্যাক্রম চালানো হয়েছে। আবার বিটিভির মাধ্যমেও চালানো হয়েছে। আমি মনে করি, সংসদ টিভি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব সময় ব্যবহার করতে পারে—বলেন তিনি।

এ সময় শিক্ষার জন্য আলাদা টিভি চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী।

২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে আজকে ছেলে-মেয়েদের যত আমরা তৈরি করতে পারবো, আমাদের বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। যদিও এত কাজ করার পরেও কিছু লোকের মন ভরে না। তাতেও বলবে আমরা নাকি কিছুই করি নাই। কিছুই করি নাই শ্রেণিটা চোখ থাকতেও দেখে না। দৃষ্টি থাকতেও তারা অন্ধ। তারা দেখবেই না। তাদের মাথার ভেতরে নাই শব্দটা ঢুকে গেছে। আমরা নাই-তে থকতে চাই না। আমরা পারি, বাংলাদেশের মানুষ পারে। আমরা সেটাই প্রমাণ করতে চাই। নাই নাই শুনবো না। আমরা করতে পারবো, এটা করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago