১৫ শতাংশ আয়করে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আশঙ্কা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি

সরকার নির্ধারিত ১৫ শতাংশ আয়কর আরোপের ফলে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

আজ রোববার সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ডেন্টাল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওপর ১৫ শতাংশ আয়কর আরোপ করে সরকার। হাইকোর্ট এক আদেশে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করলেও, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করেন।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি জানায়, আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণের বিস্তারিত এখনো প্রকাশিত না হলেও, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কর চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে।

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'দুঃখজনকভাবে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ এবং আয়কর দেওয়া সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সুযোগ না দিয়ে ঈদের আগে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা একটি অমানবিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতীয়মান। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবারের বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য বিল পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।'

'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোনো ধরনের সরকারি অনুদান ছাড়াই শুধু শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিসের ওপর নির্ভরশীল' উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, শিক্ষা সামগ্রী ও বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি কেনা, জমি কেনা এবং ক্যাম্পাস নির্মাণ সামগ্রীর ওপর বড় অংকের সরকারি ভ্যাট ও কর দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সব ব্যয় মেটানোর পর উদ্বৃত্ত অর্থ থাকলে সঞ্চয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা কার্যক্রম, নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ, বর্ধিতকরণ, হোস্টেল নির্মাণ, পরিবহণ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী কাজ সম্পাদন করা হয়।'

'করোনা পরবর্তী সময়ে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে এবং নতুন অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন পর্যন্ত ট্রাস্টি সদস্যদের ভর্তুকি দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ অবস্থায় করারোপের ফলে পক্ষান্তরে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে,' যোগ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি জানায়, 'বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না উল্লেখ আছে। এক্ষেত্রে আইন দ্বারা স্বীকৃত অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে কোনো অর্থ যেমন উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতারা নিতে পারেন না, তেমনি আয়কর হিসেবে প্রদান করা বা অন্যভাবে ব্যয় করার বিষয়টিও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে উভয় সংকটে পড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ করণীয় নির্ধারণে কর্তৃপক্ষের কার্যকরী সহায়তা তথা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং কর আইনের সাংঘর্ষিক বিভিন্ন ধারা অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে পরিবর্তন করা একান্ত জরুরি।'

আইনগত জটিলতা নিরসন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর আদায় না করা এবং ঈদের আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিতের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

 

Comments

The Daily Star  | English

New public service ordinance: Govt mulls softening strict provisions

Say high-level meeting sources; Secretariat employees suspend protests for today

10h ago