পদবঞ্চিতদের ‘ধাওয়ায়’ জেলা ছাত্রদল আহ্বায়কের নদীতে ঝাঁপ
ককটেল চার্জ, গুলিবর্ষণ ও বাড়িঘরে হামলার পর এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক শাহীনুর রহমানকে লাঞ্ছিত করেছে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
তাদের 'ধাওয়া' থেকে বাঁচতে তিতাস নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা এক কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে নবনির্মিত শিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের শিমরাইলকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর জেলা ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরীর ফেসবুক থেকে শাহীনুরকে ধাওয়া করার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়।
৩০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক লাঠিসোটা হাতে পিচঢালাই সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে ছাত্রদল আহ্বায়ক শাহীনের নাম ধরে ডাকাডাকি করছে। এ সময় সড়কের পাশে তিতাস নদীতে কালো শার্ট পরা শাহীনকে দেখা যায়।
একই ভিডিওতে আহত ছাত্রদল কর্মী বিশালকে (২৮) সড়কে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নবনির্মিত শিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের শিমরাইলকান্দি তিতাস নদী এলাকায় শাহীনুর রহমানসহ আরও কয়েকজন ঘুরতে যান। খবর পেয়ে জেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সদস্যসচিব মহসিন মিয়া সেখানে গেলে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এর মধ্যে সাবেক আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরী দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন এবং শাহীনের ওপর হামলা করেন। এ সময় শাহীন আত্মরক্ষার্থে তিতাস নদীতে ঝাঁপ দেন।
তবে তার সঙ্গে থাকা ছাত্রদলকর্মী বিশালকে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হামলার শিকার শাহীনুরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। অপরদিকে, সদ্য বিদায়ী আহ্বায়ক ফুজায়েল ও সদস্যসচিব মহসিনের ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহরাব আল হোসাইন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে পুলিশ সদস্যরা সেখানে গিয়ে কাউকে পায়নি।'
উল্লেখ্য, গত ৮ জুন ৭ সদস্যের জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ওই কমিটিতে শাহীনুর রহমানকে আহ্বায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্যসচিব করা হয়।
প্রেস রিলিজের মাধ্যমে প্রকাশিত এই কমিটির খবর জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক ফুজায়েল চৌধুরী ও সদস্যসচিব মহসিন মিয়াসহ তাদের অনুসারী পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
পরে তারা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক, যুগ্ম-সম্পাদক ও নবগঠিত ছাত্রদলের আহ্বায়কের বাড়িতে হামলা চালায়। এর জেরে ২ পক্ষের মধ্যে ককটেল হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনাও ঘটে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শহরের লোকনাথ দীঘির পাড়ে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় উভয় পক্ষ। পরে নবগঠিত কমিটির নেতারা শহরতলীর বিরাসারে কর্মসূচি করতে চাইলে সেখানে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এসময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
Comments