আবাসনখাতে বিনাপ্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ চায় রিহ্যাব

২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ঘোষিত নির্দেশনার আদলে বিনাপ্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিনিয়োগের সুযোগ রাখার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
ছবি: স্টার

২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ঘোষিত নির্দেশনার আদলে বিনাপ্রশ্নে অপ্রদর্শিত আয় ২০২২-২৩ অর্থবছরেও বিনিয়োগের সুযোগ রাখার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

আজ শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল বলেন, 'অন্যথায় এ খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা সংকটের মুখোমুখি হবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'

তিনি বলেন, 'চলতি অর্থবছরে বিনাপ্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ থাকায় ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা অর্থনীতির মূলধারায় এসেছে। সরকার ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে রাজস্ব পেয়েছে।'

'২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের পর অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যার অভাবে বিনিয়োগ কম হয়েছে।'

রিহ্যাব বলছে, নানাবিধ কারণে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতি টালমাটাল। আগামীতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে আরও বড় ধাক্কা লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেটির প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মানি ট্রাফিকিং রোধ করার চেষ্টা করছে। স্ব স্ব দেশ বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে দেশের ভেতরে রাখা যায় তার ব্যবস্থা করছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ যদি অপ্রদর্শিত অর্থপাচারের সুযোগ না রেখে মূল ধারার অর্থনীতিতে নিয়ে আসতে পারে তাহলে সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আসন্ন সংকট মোকাবিলা সহজ হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক 'হাউজিং লোন' নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রিফাইন্যান্সিং তহবিল গঠন, জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন ব্যয় হ্রাস এবং সেকেন্ডারি বাজার ব্যবসার সুযোগ তৈরিসহ নির্মাণসামগ্রীর দাম কমানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

কাজল বলেন, গত কয়েক বছর ধরে 'হাউজিং লোন'-এর যে দাবি জানানো হচ্ছে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে এই তহবিল গঠনের কোনো প্রতিফলন নেই। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য আবাসন খুব সহজেই সম্ভব হবে যদি সরকারের পক্ষ থেকে সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা যায়।

নিবন্ধন ব্যয় ১২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২-৩ শতাংশে আনার দাবিও জানায় রিহ্যাব।

রিহ্যাব সভাপতি বলেন, আবাসন খাতের অন্যতম প্রধান উপকরণ এমএস রড। গেল কয়েক মাস দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এই রডের। রডের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া।

'বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমরা চেয়েছিলাম, ইস্পাতের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কর কমানো হোক। সেটি না করে উল্টো বিক্রয় মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) বাড়ানো হয়েছে। ফলে রডের দাম আরও বাড়বে।" 

রড, সিমেন্ট, বালু, ইট, পাথরসহ ১০-১১টি নির্মাণ সামগ্রীর উপর স্টাডি করে রিহ্যাব দেখেছে গত কয়েক মাসের মূল্য বৃদ্ধিতে নতুন ও নির্মাণাধীন প্রকল্পে সমূহে প্রতি বর্গফুটের নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিহ্যাব বলছে, ৫০০ টাকা নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেলে প্রতি বর্গফুটের জন্য গ্রাহককে বাড়তি বহন করতে হবে প্রায় ১,০০০ টাকা।

সংগঠনটি বলছে, ঘোষিত বাজেটের বাড়তি চাপ তাদের সংকটকে আরও বৃদ্ধি করবে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ২ কোটি মানুষের আয়ের এ খাতটি আরও খারাপ অবস্থার দিকে যাবে।

Comments