দিনাজপুর-জয়পুরহাট

ছাগলের চামড়ার দাম ১০-৪০ টাকা, গরু ১০০-৩৫০ টাকা

দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় কোরবানির পশুর চমড়ার আশানুরূপ দাম মিলছে না। দুই জেলাতে মান ও আকার ভেদে প্রতিটি গরুর চামড়া ১০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছাগলের চামড়ার দাম আরও কম। এগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১০-৪০ টাকায়।   
ঈদের দিন বিকেল থেকেই কোরবানির পশুর চামড়া জড়ো করা হয় জেলার বৃহত্তম চামড়ার আড়ত রামনগরে। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলায় কোরবানির পশুর চমড়ার আশানুরূপ দাম মিলছে না। দুই জেলাতে মান ও আকার ভেদে প্রতিটি গরুর চামড়া ১০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছাগলের চামড়ার দাম আরও কম। এগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১০-৪০ টাকায়।   

মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ না কারায় পুজি সংকট ও চামড়া প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত লবণের দাম বাড়ায় বেশি দামে চামড়া কেনা সম্ভব হচ্ছে না।

অনেকে জানিয়েছেন, দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে গরুর সঙ্গে ছাগল ও ভেড়ার কাঁচা চামড়া বিনামূল্যে দেওয়া হলেও তা ব্যবসায়ীরা নিতে চাচ্ছেন না।

দিনাজপুর শহরের রামনগর জেলার বৃহত্তম পশু চামড়ার আড়তের বাজার। ঈদের দিন বিকেল থেকেই এখানে কোরবানির পশুর চামড়া শুরু করে। দিনাজপর সদর উপজেলা ছাড়াও, জেলার অন্যন্য উপজেলাসহ আশপাশের জেলা থেকেও এখানে কোরবানির পশুর চামড়া আসে। এখানে মান ও আকার ভেদে প্রতিটি গরুর চামড়া ১০০-৩৫০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া, ছাগল ও ভেড়ার চামড়ার দাম আরও কম। এগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ১০-৪০ টাকায়।

এখানে রামনগরে গরুর চামড়া নিয়ে আসা গুলজার হোসেন বলেন, 'সরকার চামড়ার দর নির্ধারণ করে দিলেও ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। একইসঙ্গে কোনো তদারকি নেই। নিরুপায় হয়ে বিক্রেতারা নামমাত্র মূল্যে কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমার ১ লাখ ১৮ হাজার টাকার গরুর চামড়া শেষ পর্যন্ত ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আমার প্রত্যাশা ছিল ৮০০ টাকায় বিক্রি করার। বেশিরভাগ চামড়া ব্যবসায়ী ছাগলের চামড়া কিনতে চাচ্ছেন না।'

গুলজার দাবি করেন, 'গত কয়েক বছর ধরে শুনে আসছি ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করছেন না বলে আড়ত ব্যবসায়ীরা পুজি স্বল্পতায় ভুগছেন। এটা কী আসলে সমস্যা, নাকি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রেতাদের জিম্মি করছেন আড়তদাররা। সরকারের উচিত আসল কারণটি খুঁজে বের করা।'

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার চামড়া ব্যবসায়ী শমসের আলী জানান, আকার ও প্রকার ভেদে গরুর চামড়া ৩৫০-৫০০ বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়া কেউ কিনছেন না।

দিনাজপুর আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের দাবি করেন, 'সরকারের বেধে দেওয়া দামের মধ্যেই আমরা চামড়া কিনছি। পুঁজি ঘাটতি এবং ট্যানারি ব্যবসায়ীরা বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এ ছাড়া লবণের দাম এ বছর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।'

তিনি বলেন, 'মঙ্গলবার পর্যন্ত আমরা প্রায় ২৫ হাজার ৩০ হাজার গরুর চামড়া কিনেছি। এভাবে সরবরাহ অব্যাহত থাকলে আরও চামড়া কেনা হবে।'

জয়পুরহাটেও চামড়ার বাজারে প্রায় একই দশা। এখানে প্রতিটি গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ২০০-৪০০ টাকায়। ছাগল ও ভেড়ার চামড়া প্রতি পিস ১০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

জয়পুরহাট সদর উপজেলার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কমার কারণে জেলার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আসলে চামড়ার বাজারে এক ধরনের অরাজকতা চলছে।

জয়পুরহাট হাইড ট্রেডার্স গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, 'বাজারে প্রচুর পরিমাণে কাঁচা চামড়ার সরবরাহ আছে। কিন্তু পুঁজি ঘাটতির কারণে আমরা পর্যাপ্ত কাঁচা চামড়া কিনতে পারছি না। জয়পুরহাটের অধিকাংশ আড়ত ব্যবসায়ী ট্যানারি ব্যবসায়ীদের কাছ বকেয়া পাচ্ছেন না। বকেয়া পরিশোধ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
Pro-Awami League journalist couple arrested

The indiscriminate arrests and murder charges

Reckless and unsubstantiated use of murder charges will only make a farce of the law, not bring justice to those who deserve it.

5h ago