দলে আধিপত্যের লড়াইয়ে দুর্বল ট্রাম্প

donald trump
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: ফাইল ফটো

মার্কিন সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির দলনেতা মিচ ম্যাক-কনেলকে পদ থেকে সরাতে প্রভাব খাটাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৯৮৫ সাল থেকে নিয়মিতভাবে সিনেটর নির্বাচিত হয়ে আসছেন ম্যাক-কনেল। দলে যেকোনো নেতার চেয়ে তার প্রভাব বেশি। তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যেন নিজেকেই বিপাকে ফেলেছেন ট্রাম্প।

গতকাল বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালের শেষের দিকে ট্রাম্প ও ম্যাক-কনেলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। তখন থেকেই ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর ও নিজের শীর্ষ সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ম্যাক-কনেলকে পদচ্যুত করার চেষ্টা করে আসছেন। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজনের বরাত দিয়ে সে বছর সেপ্টেম্বরে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রথম এ সংবাদ প্রকাশ করে।

তবে সেসময় দলের শীর্ষ নেতাদের সমর্থন পাননি ট্রাম্প।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে এক বার্তায় ট্রাম্প কেনটাকি অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত সিনেটর ম্যাক-কনেল সম্পর্কে বলেন, 'এই লোকটি কীভাবে নেতা হিসেবে থাকেন তা আমি বুঝতেই পারছি না। শুধু আমিই নয়, দলের সবাই এমনটিই ভাবছেন।'

ট্রাম্প ও ম্যাক-কনেল দ্বন্দ্ব আরও জোরালো হয় ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার পর। ম্যাক-কনেল এই হামলার জন্য ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করলে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

এরপর থেকে ট্রাম্প ক্রমাগতভাবে ম্যাক-কনেলকে পদচ্যুত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ট্রাম্প ম্যাক-কনেলের ওপর এতটাই ক্ষিপ্ত যে তিনি তাকে 'বৃদ্ধ কাক' বলে ডাকেন।

আগামী ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ঘিরে ট্রাম্প আবার তার পছন্দের নেতাদের নিয়ে ম্যাক-কনেলকে পদচ্যুতের চেষ্টায় নেমেছেন। সেই নির্বাচনে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ'র ৪৩৫ আসনে ও সিনেটের ৩৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তাই দলের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্পকে সঙ্গে নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের আকৃষ্ট করার কথা ভাবছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ম্যাক-কনেলকে পদচ্যুত করার বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প দলের ভেতর জোরালো সমর্থন পাচ্ছেন না। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট নিজের প্রভাব খাটিয়ে দলে নতুন দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এত চেষ্টার পরও ম্যাক-কনেলের প্রতি রিপাবলিকান সিনেটরদের ও আগামী নির্বাচনে মনোয়নপ্রত্যাশীদের সমর্থন অটুট আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের প্রতি সেসব মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার সমর্থন আছে তারাও ম্যাক-কনেলের পদচ্যুতির বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন। শুধু দীর্ঘ সময়ের সিনেটর হিসেবে নয় দলের তহবিল জোগাতে ম্যাক-কনেলের ভূমিকা যে কারুর চেয়ে শক্তিশালী।

দলের অনেকে এ বিষয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করলেও তিনি তা কানে তোলেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ অনেকে সিএনএন'কে বলেছেন, মনে হচ্ছে আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে ট্রাম্প নিজেকে 'কিং মেকার' হিসেবে তুলে ধরার ইচ্ছা নিয়ে আবারও ম্যাক-কনেলের বিরুদ্ধে নেমেছেন।

আলাবামা সিনেট নির্বাচনে মনোয়নপ্রত্যাশী কট্টর রক্ষণশীল কংগ্রেস সদস্য মো ব্রুককে সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্প। ব্রুকের প্রচারণাদলের একজন গত ডিসেম্বরে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ম্যাগাজিন 'পলিটিকো'কে বলেন, 'ব্রুক এখনো বিশ্বাস করেন ম্যাক-কনেলের নেতৃত্ব আরও ২ বছর থাকতে পারে।'

ম্যাক-কনেলের নেতৃত্ব নিয়ে উত্তর ক্যারোলিনায় ট্রাম্পের পছন্দের প্রার্থী টেড বাড মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার প্রচারণা দলের মুখপাত্র বলেন, 'আমাদের প্রার্থীর একটাই চিন্তা হলো রিপাবলিকান পার্টিকে নির্বাচনে জেতানো।'

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা বলেন, 'সব কিছু দেখে-শুনে মনে হচ্ছে ম্যাক-কনেলকে সরানো যাবে না। এই রিপাবলিকান নেতার প্রতি ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে আসলে নিজেরই সময় নষ্ট করছেন।'

তবে আলাস্কার সিনেট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেলি শিবাকা গত মাসে বলেছিলেন যে তিনি ম্যাক-কনেলকে নেতা হিসেবে সমর্থন করেন না।

Comments

The Daily Star  | English

HC issues rule for curbing air pollution in Dhaka

The HC bench of Justice Kazi Zinat Hoque and Justice Aynun Nahar Siddiqua issued the rule after hearing a writ petition

37m ago