‘চার বছর পর বাংলাদেশের ভক্তরা ব্রাজিল ও ফ্রান্সে ভাগ হয়ে যাবে’
১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন ক্রিস্টিয়ান কারেম্বু। বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড় হওয়ায় বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ঘুরছেন গোটা দুনিয়া। বাংলাদেশে ট্রফি নিয়ে ৩৬ ঘণ্টার অবস্থানে এই ফরাসি কিংবদন্তি টের পেয়েছেন এখানকার ফুটবল উন্মাদনা। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পাগলামো আর ফ্রান্স সমর্থন কম দেখে মজা করতেও ছাড়েননি। তার আশা চার বছর বাংলাদেশে বেড়ে যাবে ফ্রান্সের অনেক সমর্থক।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে এসেছিল বিশ্বকাপের আসল ট্রফির রেপ্লিকা। এবার এসেছে আসল ট্রফি। নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপের আসল ট্রফি স্পর্শ করতে পারেন কেবল বিশ্বকাপজয়ী খেলোয়াড় ও কোন দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান। আর কারো তা স্পর্শ করার সুযোগ নেই। ট্রফির সঙ্গে কারেম্বুর বাংলাদেশে আসাও সেকারণে।
বাংলাদেশ ছাড়ার আগে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কারেম্বু যেসব নিয়ে কথা বলেছেন:
বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলে না, তবু বিশ্বকাপ নিয়ে এখানে এমন উন্মাদনা
'যখন এই দেশে পা রাখি, অনেক গরম অনুভূত হলো। কিন্তু আমি অবাক হলাম মানুষকে এভাবে ট্রফি দেখতে আসতে দেখে।'
'মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়েছে। তারা জানিয়েছেন এই দেশের ভক্তরা ফুটবল নিয়ে কতটা পাগল। বিশ্বকাপের মতো আসরে তারা কতটা উন্মাদনায় মাতেন।'
'এখানে অনেক ব্রাজিল ও অনেক আর্জেন্টিনার সমর্থক আছেন। এটা অনেক অনন্য একটা ব্যাপার। ফুটবল বৈচিত্র্যের প্রমাণ।'
২০২২ বিশ্বকাপে ফেভারিট কারা
'ফেভারিট সব সময় একই। আমার মনে হয় আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, জার্মানি, স্পেন, ইংল্যান্ড অবশ্যই ফ্রান্স। আমার টপ ফেভারিট? অবশ্যই ফ্রান্স।'
আর্জেন্টিনা থেকে বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ কি বেশি ব্রাজিলের?
'আমি বেশি বলতে পারছি না। কারণ এই দেশে অর্ধেক ব্রাজিল আর অর্ধেক আর্জেন্টিনার সমর্থক। তৃতীয় ফেভারিট কোনটা?
সাংবাদিকরা যখন জানান ইংল্যান্ড অধবা জার্মানি। কারেম্বু কৌতুকের স্বরে বলেন, 'ফ্রান্স না? তাহলে আমি চলে যাই।'
'হয়ত চার বছর পর আবার যখন আসব, আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশ কেবল ফ্রান্স ও ব্রাজিলে বিভক্ত।'
বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের প্রধান হুমকি
'আমরা (ফ্রান্স) যেহেতু ফেভারিট, প্রতিটি দলই প্রধান প্রতিপক্ষ। আমাদের অনেক সতর্ক থাকতে হবে।'
এই ট্রফি ট্যুরের উদ্দেশ কি
'আমরা এখানে এসেছি ফিফা ট্রফির সঙ্গে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে। প্রতিটি ফেডারেশনের আয়োজনের অধিকার আছে। প্রতিটি দেশের ভক্তদের কাছে গিয়ে ছবি তুলার অধিকার আছে। এবং অবশ্যই ট্রফির মাধ্যমে প্রেরণা দেওয়ার আছে। এই ট্রফির মাঝে অনেক গল্প অনেক নিবেদন জড়িয়ে আছে।'
'এটা বিজয়ের প্রতীক। এটা একসঙ্গে আমাদের খেলাধুলোর চেতনা বহন করে। একে আমাদের সম্মান করা দরকার।'
বিশ্বকাপ জেতার প্রথম অনুভূতি
'এই ট্রফি। আমি স্পর্শ করিনি। চুমু খেয়েছি (হাসি)। ফ্রান্স জিতবে কেউ প্রত্যাশা করেনি। কিন্তু দলের স্পিরিট আমাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ে গেছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এটা আমাদের শক্তি, প্রেরণা দিয়েছে।'
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন কারেম্বু। তবে ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতাই তাকে এনে দিয়েছে অমরত্ব। নিজের ক্যারিয়ারের কথা বলতে গিয়ে নিশ্চিতভাবেই সেটিকেই রাখলেন সবার উপরে, 'আমরা যখন বাচ্চা ছিলাম। আমি টিভিতে দেখতাম কিন্তু কখনো ভাবিনি এই ট্রফি একদিন আমি স্পর্শ করতে পারব। যদি কাপ না জিততাম আজ আপনাদের সামনে আসতে পারতাম না।'
বাংলাদেশের আতিথেয়তা
'এখানে আসার আগে (সংবাদ সম্মেলনে)। আমি কিছু লিচু আর আম খেয়েছি। এবং অন্য খাবারও। আমি বৈচিত্র্যময় মানুষের সঙ্গে মিশতে চাই, খাবারের অভিজ্ঞতা নিতে চাই। এখানে আসা ছিল দারুণ কিছু।
'আমি সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই তারা যেভাবে আমাদের গ্রহণ করেছেন। ২০২৬ সালেও এখানে আবার ফিরে আসতে চাই। সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত। এখানকার আতিথেয়তা অবিশ্বাস্য। ধন্যবাদ।'
Comments