উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল শাবিপ্রবি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে আন্দোলন।
ছবি: শেখ নাসির/স্টার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে আন্দোলন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর। সমবেত হন কয়েকশ সাধারণ শিক্ষার্থী। দুপুরে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জমায়েত করেন তারা।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন রোববার সন্ধ্যায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।

এ ছাড়া, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গোলচত্বরের পাশে চলছে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ একাত্মতা পোষণ করে স্বাক্ষর করেন।

sylhet_protest3_18dec22.jpg
ছবি: শেখ নাসির/স্টার

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলায় সহমর্মিতা পোষণে দুপুরে ক্যাম্পাসে আসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তারাও গণসাক্ষর কর্মসূচিতে অংশ নেন এবং বক্তব্য রাখেন।

গত রোববার সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবির আন্দোলনের তৃতীয় দিন বিকেলে উপাচার্যকে আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখতে তাকে মুক্ত করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এ সময় অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হন।

সেই রাতে ওই হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন এবং রাতে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দ্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে হলে আবাসিক ছাত্রদের সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেন উপাচার্য।

sylhet_protest2_18dec22.jpg
ছবি: শেখ নাসির/স্টার

পুলিশি হামলা ও ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেই রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে পর দিন (সোমবার) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করেন। একইসঙ্গে হল ত্যাগ না করার ঘোষণাও দেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চ থেকে এক ঘোষণায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়, প্রশাসনিক ভবন, সব একাডেমিক ভবন ও হলের প্রাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। তবে ভর্তি কার্যক্রম চলতে থাকায় রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেননি তারা।

বিকেল ৪টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের রাস্তায় প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসভবনের ফটকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে জলকামান ও আর্মার্ড ভেহিকেল রাখা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাঁশ, বালুর বস্তাসহ বিভিন্ন কিছু দিয়ে প্রধান ফটক ভেতর থেকে আটকে দেন।

রাত ১১টার দিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেনের প্রতিনিধি হিসেবে একজন ব্যক্তিগত সহকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং তার মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি অ্যাকশনে দুঃখ প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে অনুরোধ করেন এবং তার নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পুলিশের জলকামান ও আর্মার্ড ভেহিকেল সরিয়ে দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Taka to trade more freely by next month

Bangladesh will introduce a crawling peg system by next month to make the exchange rate more flexible and improve the foreign currency reserves, a key prescription from the International Monetary Fund.

6h ago