মানিকগঞ্জের স্কুলে ৪ পদে ‘অর্থের বিনিময়ে’ নিয়োগের অভিযোগ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪টি পদে অর্থের বিনিময়ে ‘অযোগ্য প্রার্থী’দের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ এই নিয়োগ বাতিল ও পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
তিল্লী উচ্চ বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪টি পদে অর্থের বিনিময়ে 'অযোগ্য প্রার্থী'দের নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবৈধ এই নিয়োগ বাতিল ও পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ এবং চাকরি প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে তিল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সহকারী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নিয়োগ বিধি ও শর্তের ভিত্তিতে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে ৮ জন, অফিস সহায়ক পদে ৮ জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৪ জন ও আয়া পদে ৩ জন আবেদন করেন।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত ছিল। তবে কেন্দ্রে গিয়ে প্রার্থীরা জানতে পারেন পরীক্ষার দিন পরিবর্তন করা হয়েছে এবং নতুন তারিখ পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রার্থীদের না জানিয়ে, গোপনে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছ।

এ বিষয়ে গত রোববার অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ প্রার্থী মো. লিটন মিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, অর্থের বিনিময়ে গোপনে পরীক্ষা নিয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র পাল এবং সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম ভুইঁয়া অবৈধভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দিতে আমার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিব। কিন্তু আমি তাতে রাজি হইনি।'

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান ও স্বপন কুমার ঘোষও একই অভিযোগ করেন। তারা জানান, অর্থের বিনিময়ে 'অযোগ্য প্রার্থী'দের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিল্লী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম বলেন, 'তিল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি সবার মুখে মুখে। বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ও পরিবেশেরও অবনতি হচ্ছে। এসব নিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।'

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম ভুইঁয়া বলেন, 'যথাযথ নিয়ম মেনেই যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা নিয়োগ পাননি, তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।'

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বিকাশ চন্দ্র পাল বলেন, 'যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা সবাই যোগ্য।'

অন্য প্রার্থীদের কেন পরীক্ষার কথা জানানো হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, '২ এপ্রিল পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে ৩০ মে পরীক্ষা হয়। সেখানে যারা ভালো করেছেন তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।'

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, 'ওই বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করার জন্য ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Teesta floods bury arable land in sand, leaving farmers devastated

40 unions across 13 upazilas in Lalmonirhat, Kurigram, Rangpur, Gaibandha, and Nilphamari are part of the Teesta shoal region

1h ago