সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা

প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার দিচ্ছে বিদ্যানন্দ

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আজ সোমবারও প্রায় অপরিবর্তিত আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত মানুষের অনেকেই দিন কাটাচ্ছেন অর্ধাহার-অনাহারে। সিলেট-সুনামগঞ্জে বিস্তীর্ণ এলাকার বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণের পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তা ভুক্তভোগীদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের।

তবে এদিক থেকে ব্যতিক্রম বেসরকারি দাতব্য সংস্থা বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি গত ৩ দিন ধরে বন্যাদুর্গত অঞ্চলে দুর্বার গতিতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ঢাকা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবক সালমান খান ইয়াসিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বর্তমানে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও কুড়িগ্রামের বন্যাদুর্গত অঞ্চলে তাদের ৪টি টিম দিন-রাত কাজ করছে। যেখানে স্বেচ্ছাসেবক আছেন প্রায় ৪০ জন। 

তিনি জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার বানভাসিকে রান্না করা খাবার দিচ্ছেন তারা। গত ৩ দিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার (খিচুড়ি ও সেদ্ধ ডিম) দেওয়া হয়েছে।  

এ ছাড়া, সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৪০০ পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবারকে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবারের একেকটি প্যাকেটে আছে ১ কেজি মুড়ি, আধা কেজি চিড়া, আধা কেজি গুড়, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট, মোমবাতি এবং দিয়াশলাই।

সালমান খান ইয়াসিন আরও জানান, ময়মনসিংহ থেকে তাদের একটি টিম নেত্রকোণার দুর্গত এলাকায় গিয়ে রান্না করা খাবার বিতরণ করছে।

ছবি: সংগৃহীত

অপরদিকে, কুড়িগ্রামেও রয়েছে বিদ্যানন্দের একটি টিম। তারা গত ২ দিন ধরে সেখানে বানভাসি প্রায় ৭০০ পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেছে। তবে আজ থেকে সেখানে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

সালমান খান ইয়াসিন বলেন, '২০১৭ সালের বন্যার সময়ও আমরা সিলেট-সুনামগঞ্জে কাজ করেছি। তাছাড়া দুর্গতদের মধ্যে রান্না করে খাবার বিতরণে আমরা আগে থেকেই পরীক্ষিত। তবে এবার সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গত এলাকায় রান্নার সরঞ্জামের অভাবে আমরা খাবার সরবরাহের পরিধি খুব একটা বাড়াতে পারছি না। তবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ অনুদান এসেছে, আমরা মোটামুটি ১ লাখ মানুষকে সহায়তা করতে পারব।' 

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মূল উদ্দেশ্য দুর্গতদের পুনর্বাসন। এসব এলাকায় যতদিন পানি থাকবে, আমরা খাবার বিতরণ করে যাব। তবে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পুনর্বাসনের দিকে মনোযোগী হব।'

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে 'পড়বো, খেলবো, শিখবো' স্লোগান নিয়ে নারায়ণগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পড়ালেখার সুযোগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের গোড়াপত্তন করেন কিশোর কুমার দাশ নামের এক স্বপ্নবান তরুণ। পরবর্তীকালে ২০১৬ সালে ফেনীতে 'এক টাকায় আহার' প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে আলোচনায় আসে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Banning party activities: Govt amends anti-terror law

The interim government is set to bring the curtain down on the Awami League as a functioning political party.

5h ago