সোনার ধান পচে যাওয়ায় দিশেহারা হাওরের কৃষক

উজান থেকে আসা ঢল ও অবিরাম বৃষ্টি নিঃস্ব করেছে হাওরের কৃষকদের। স্বপ্নের বোরো ধান শুকাতে না পারায় পচে যাচ্ছে। ধানে গজিয়েছে শেকড়। দুশ্চিন্তার রশি টানাই যেন তাদের ভাগ্যলিখন।
সুনামগঞ্জের করচার হাওরে দোয়ারাবাজার সড়কে পচে যাচ্ছে ধান। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

উজান থেকে আসা ঢল ও অবিরাম বৃষ্টি নিঃস্ব করেছে হাওরের কৃষকদের। স্বপ্নের বোরো ধান শুকাতে না পারায় পচে যাচ্ছে। ধানে গজিয়েছে শেকড়। দুশ্চিন্তার রশি টানাই যেন তাদের ভাগ্যলিখন।

সম্প্রতি সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওর ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে।

জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার আমবাড়ি এলাকার কৃষক সাজ্জাদ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে অনেক কষ্টে ধান কেটে মাড়াই দেওয়ার পর থেকেই লাগাতার বৃষ্টি চলছে। সব ধানেই এখন শেকড় গজিয়েছে। এ রকম আর ২-৪ দিন চলতে থাকলে আমাদের সব ধানই নষ্ট হয়ে যাবে।'

হাওরাঞ্চলের গ্রামে-গ্রামে এখন এই দুশ্চিন্তারই গল্প। এমন দুঃসহ পরিস্থিতিতে এখন জেলার হাজার হাজার কৃষকের।

ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

কৃষক ফুয়াদ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বোরো ধানে ফলন ভালো হয়েছিল। ভেবেছিলাম অনেক লাভ হবে। যা ঋণ নিয়েছিলাম তা পরিশোধ করতে পারবো। সেই কপাল আর হলো না। কেটে রাখা ধান বিচালি পেতে ক্ষেতেই শুকাতে দিয়েছিলাম। বৃষ্টিতে প্রায় ৮০ ভাগ ধানে শেকড় গজিয়ে গেছে। শেষ কতটুকু ধান ঘরে তুলতে পারব বুঝতে পারছি না।'

'কিছু ধান মাড়াইয়ের জন্য রাস্তার পাশে রেখেছিলাম তাও পচে গেছে। এবারের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান ঢল আমাদের নিঃস্ব করেছে। পাওনাদারদের কথা মনে হলে রাতে আর ঘুম আসে না। কী যে করি বুঝতে পারছি না,' যোগ করেন তিনি।

কৃষক শরিফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু ধান পচে গেছে। বৃষ্টির আগে ধানের দাম ছিল এক হাজার টাকা মণ। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০০ টাকা মণ দরে। এ দামে ধান বিক্রি করলে আমাদের খরচও উঠবে না। সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করে সহযোগিতা দেয় তাহলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।'

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টানা বৃষ্টির কারণেই হাওরের মানুষ ধান শুকানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। চারদিকে বন্যার পানি থাকায় শুকানোর জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় গ্রামের পাশের সড়কই ভরসা। বৃষ্টিতে তারা তাও ঠিকমতো করতে পারছেন না।'

তিনি আরও বলেন, 'শুকনো ধানে পানি লাগায় আর্দ্রতা বেড়ে গিয়ে শেকড় গজিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা যদি দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেন এবং আবার বৃষ্টি না হয় তাহলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Taka to trade more freely by next month

Bangladesh will introduce a crawling peg system by next month to make the exchange rate more flexible and improve the foreign currency reserves, a key prescription from the International Monetary Fund.

5h ago