বিমানের দাবি নাকচ করে দিলো কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ

গত ১৮ জুলাই কলকাতায় বিমানের ফ্লাইটে ৪ ঘণ্টাধিক সময় আটকে থাকেন দেড় শতাধিক যাত্রী। ছবি: শওকাত হোসেন

কারিগরি ত্রুটির জন্য বিমানের একটি ফ্লাইট গত ১৮ জুলাই কলকাতা বিমানবন্দরে ৪ ঘণ্টা আটকে ছিল। বিমানের দাবি, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়নি। তবে, সেই দাবি নাকচ করেছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।

তারা জানিয়েছে, উড়োজাহাজে বোর্ডিং করা যাত্রীদের বিমানবন্দরে নেমে আসার ক্ষেত্রে নীতিগত কোনো বাধা নেই।

গত ১৮ জুলাই ১৫০ যাত্রীসহ বিমানের ফ্লাইট বিজি ৩৯৬ স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে শুরু করে প্রায় ৪ ঘণ্টা কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে থাকে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে, বোয়িং ৭৩৭ মডেলের উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ারে কারিগরি ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জাহিদ হোসেন এর আগে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বের হয়ে আসার অনুমতি দেয়নি।

গত ১৮ জুলাই বিমানের ফ্লাইটের ভেতর যাত্রীরা। ছবি: শওকত হোসেন

এই ৪ ঘণ্টা উড়োজাহাজের এসি বন্ধ রাখা ছিল এবং যাত্রীদের কোনো ধরনের খাবারও দেওয়া হয়নি। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটির মেরামত কাজ চলমান থাকায় তারা এসি চালু ও খাবার দিতে পারেননি।

যান্ত্রিক ত্রুটির মেরামত কাজ শেষে ফ্লাইটটি সোমবার দিনগত রাত ১টা ৪২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে।

কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, 'আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজের ভেতরে খাবার সংরক্ষিত ছিল। এমন যদি হয়, যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, অর্থাৎ উড়োজাহাজে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার বা পানীয় নেই, সেক্ষেত্রেও স্থানীয় এজেন্সি, যেমন তাজ স্ট্যাটস দ্রুততম সময়ে সেগুলো সরবরাহ করতে পারে।'

বিমানবন্দরে আটকে থাকা উড়োজাহাজে বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকায় এসি কাজ করছিল না। ফলে ভারতে চিকিৎসার জন্য আসা যাত্রীদের অনেকেই অসুস্থ বোধ করতে থাকেন।

কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানকে কলকাতায় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয় এয়ার ইন্ডিয়া। প্রয়োজনে এসি চালানোর জন্য ভূমি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহকারী যন্ত্র উড়োজাহাজের সঙ্গে সংযুক্ত করে তা চালানো যায়। এ ছাড়াও, ভূমি-ভিত্তিক ও বহনযোগ্য এসিও আছে তাদের কাছে। তবে, বিমানের ফ্লাইট পরিচালনাকারীরা এসব সেবার জন্য অনুরোধ জানাননি।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ হোসেনকে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তিনি এ মুহূর্তে ঢাকার বাইরে আছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছেন না। এ ছাড়াও তিনি ডেইলি স্টারকে বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।

বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগের পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে জেনে তিনি ফোন করবেন। তবে পরবর্তীতে তিনি আর ফোন করেননি।

গত ১৮ জুলাই বিমানের ফ্লাইটের ভেতর যাত্রীরা। ছবি: শওকত হোসেন

গতকাল বিমানের মুখপাত্র তাহেরা খন্দকার ডেইলি স্টারকে জানান, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিধি-নিষেধের কারণেই সেদিন যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে বের করে আনা সম্ভব হয়নি।

তবে, কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে বিমান বাংলাদেশ এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছিল কি না, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তাহেরা খন্দকার জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Patients suffer as national eye hospital remains closed for 4th day

The 250-bed hospital remained non-operational following a tripartite clash on Wednesday

1h ago