পঞ্চগড়ে কাঁচা চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য কেজি প্রতি ১৮ টাকা নির্ধারণ

পঞ্চগড়ে সমতল ভূমিতে উৎপাদিত প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পঞ্চগড় জেলা কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।
পঞ্চগড়ের একটি চা বাগান। ছবি: কামরুল ইসলাম রুবাইয়াত/স্টার

পঞ্চগড়ে সমতল ভূমিতে উৎপাদিত প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পঞ্চগড় জেলা কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভায় এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মূল্য নির্ধারণ সভায় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আল মামুন, বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকনসহ বিভিন্ন চা কারখানার প্রতিনিধি, জনপ্রতিনিধি, চা চাষিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি বছর মার্চ থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত হলো চা উৎপাদনের মৌসুম।

সে অনুযায়ী গত ১ মার্চ থেকে পঞ্চগড়ে ২০টি ও ঠাকুরগাঁও ও লালমনিরহাটে ১টি করে দুটি চা কারখানায় কাঁচা চা পাতা কেনা শুরু হয়।

মৌসুমের শুরুর দিকে কারাখানাগুলো চা চাষিদের কাছ থেকে প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা ২২ টাকা থেকে ২৬ টাকা পর্যন্ত কিনেছিলেন। সম্প্রতি দুটি নিলামের পর গত এক সপ্তাহ ধরে আকস্মিকভাবে কারখানা মালিকরা প্রতি কেজি কাঁচা চা পাতা ১২-১৪ টাকায় কেনা শুরু করে।

অনেক ক্ষেত্রে চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা চা পাতা কেনার সময় ১৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মোট পাতার ওজন থেকে কর্তন করছিলেন কারখানা মালিকরা।

এতে চা চাষিরা ক্ষুব্ধ হয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগসহ সড়কে কাঁচা চা পাতা ফেলে আন্দোলন করে। চাষিদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বুধবার বিকেলে জরুরি সভা আহ্বান করেন।

সাধারণত মৌসুম চলাকালে চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে তৈরি চায়ের নিলাম বাজারে ১৫টি নিলামের গড় মূল্যের ওপর ভিত্তি করে কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ কমিটির সভায় কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু এ মৌসুমে মাত্র দুটি নিলামের পরপরই কাঁচা চা পাতার দরপতন ঘটে।

গত মৌসুমের মোট ৪৫টি নিলামের গড় মূল্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতি কেজি চা পাতার সর্বনিম্ন মূল্য ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সভায় চা চাষিরা বলেন, তারা কারখানায় চা গাছের উপর থেকে সাড়ে ৪ পাতা পর্যন্ত কাঁচা চা পাতা সরবরাহ করবেন এবং কারখানাগুলো কোনো অজুহাতে শুকনো কাঁচা চা পাতার ওজন বাদ দিতে পারবে না।

সভায় এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

তবে ১৮ টাকার উপরেও কারখানাগুলো চাষিদের কাছ থেকে কাঁচা চা পাতা কিনতে পারবেন এবং বৃষ্টিতে বা পানিতে ভেজা কাঁচা চা পাতা হলে ১০ শতাংশ কর্তন করতে পারবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামীম আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি বছর চায়ের নিলাম বাজারে মোট ৪৫টি করে নিলামে তৈরি চা বিক্রি হয়ে থাকে। ১৫টি নিলামের গড় মূল্যের ওপর কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে।

যেহেতু চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি নিলাম হয়েছে, এজন্য গত মৌসুমের ৪৫টি নিলামের প্রতি কেজি তৈরি চায়ের গড় মূল্যের ওপর ভিত্তি করে এই মূল্য নির্ধারণ করা হলো।'

এতে বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ টি ফ্যাক্টরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্মতি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'যেহেতু পঞ্চগড়ের বাইরে উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলাগুলোতে কাঁচা চা পাতার মূল্য নির্ধারণে কোনো কমিটি নেই, তাই উত্তরাঞ্চলের অন্যান্য জেলাগুলোতেও কারখানা মালিকরা এই দর অনুসরণ করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

4h ago