ধনীদের কর বাড়তে পারে

স্টার ফাইল ফটো

সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাকে বাস্তবায়ন করতে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ধনাঢ্যদের ওপর করের বোঝা বাড়তে যাচ্ছে। যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ কোটি বা তারচেয়েও বেশি টাকা আছে, তাদের ওপর আরও উচ্চ মাত্রায় আবগারি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে সরকার।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ডেবিট বা ক্রেডিট আকারে ১ থেকে ৫ কোটি টাকার স্থিতি আছে, এরকম অ্যাকাউন্টের মালিকদের কাছ থেকে ব্যাংক বছরের যেকোনো সময় ১৮ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কেটে নেবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের যেসব কর্মকর্তা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাদের কাছ থেকে দ্য ডেইলি স্টার এ তথ্য জানতে পেরেছে।

এ মুহূর্তে এ ধরনের স্থিতির জন্য আবগারি শুল্কের পরিমাণ ১৫ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষ নাগাদ ডেবিট বা ক্রেডিট আকারে ১ থেকে ৫ কোটি টাকার মধ্যে স্থিতি আছে এরকম ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫১।

আগামী অর্থবছরে ৫ কোটির চেয়ে বেশি স্থিতি আছে, এরকম অ্যাকাউন্টের আবগারি শুল্ক ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে ৪৫ হাজার টাকা হবে।

গত বছরের শেষে এরকম স্থিতিসহ ৫৪ হাজার ২১৯টি অ্যাকাউন্টের অস্তিত্ব ছিল।

অন্যান্য ক্ষেত্রে আবগারি শুল্কে কোনো পরিবর্তন আসবে না।

এ মুহূর্তে বছরের যে কোনো সময়ে ডেবিট বা ক্রেডিট আকারে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির জন্য কোনো আবগারি শুল্ক নেই। ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা স্থিতির জন্য আবগারি শুল্কের পরিমাণ ১৫০ টাকা।

৫ থেকে ১০ লাখ টাকার মধ্যে স্থিতির জন্য আবগারি শুল্ক ৫০০ টাকা এবং ১০ লাখের চেয়ে বেশি কিন্তু ১ কোটির চেয়ে কম স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক হিসেবে ৩ হাজার টাকা কেটে নেবে ব্যাংকগুলো।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আবগারি শুল্কের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং চলমান অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে রাজস্ব আদায়ের দিক দিয়ে এই খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

গত বছরের জুলাই থেকে এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত আবগারি শুল্ক হিসেবে ২ হাজার ৮১১ দশমিক ৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে, যেটি এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।

চলমান অর্থবছরে সামগ্রিকভাবে আবগারি শুল্ক হিসেবে ৩ হাজার ৬৮৫ দশমিক ৭ কোটি টাকা আদায়ের প্রত্যাশা করছে এনবিআর।

বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি ও অর্থনীতির ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরের হাতে ধনাঢ্যদের কাছ থেকে আরও রাজস্ব বাড়ানো ছাড়া আর তেমন কোনো বিকল্প নেই। উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এনবিআর।

ইতোমধ্যে সরকার বিলাসবহুল পণ্যের ওপর শুল্কের পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

তবে ব্যাংকগুলো উচ্চ স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি থেকে আসা অর্থের পরিমাণ বাড়বে এবং এই খাতে এ বছর প্রবৃদ্ধিও সন্তোষজনক। সেক্ষেত্রে এ ধরনের উদ্যোগের কী প্রয়োজন?'

উচ্চ-স্থিতির অ্যাকাউন্টগুলো মূলত সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট এবং যেহেতু মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ইতোমধ্যে কমে গেছে, আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলে তাদের জন্য এটি নতুন সমস্যার সৃষ্টি করবে।

'আমি সরকারকে অনুরোধ করব এরকম কিছু না করতে', যোগ করেন তিনি।

অনুবাদ করছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

Khaleda urges unity, quick action to institutionalise democracy

She also demanded a comprehensive list of victims of abduction, murder, and extrajudicial killings

3h ago