‘এইসব দিনরাত্রির নীলু ভাবিকে দর্শক এখনো মনে রেখেছেন’

বাংলাদেশের প্রবীণ অভিনেত্রী ডলি জহুর। টিভি নাটক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র সব ক্ষেত্রেই সরব পদচারণা তার। এই অভিনেত্রী দু’বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারের মুখোমুখি হন ডলি জহুর। কথা বলেন নানা বিষয়ে।
ডলি জহুর। ছবি: স্টার

বাংলাদেশের প্রবীণ অভিনেত্রী ডলি জহুর। টিভি নাটক থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র সব ক্ষেত্রেই সরব পদচারণা তার। এই অভিনেত্রী দু'বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারের মুখোমুখি হন ডলি জহুর। কথা বলেন নানা বিষয়ে।

আপনি তো বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া ২ দেশেই বসবাস করছেন, ২ দেশে বসবাসের অভিজ্ঞতা কেমন?

সত্যি বলছি, দেশেই আমার শান্তি। নিজের দেশেই যতো সুখ। নিজের ঘরের মতো শান্তি পৃথিবীর আর কোথাও নেই। বিদেশে হয়ত বিত্ত আছে, কিন্তু এ দেশের মাটির ঘ্রাণ, আলো বাতাস আমার আপন। এমনকি এ দেশের রিকশাওয়ালার ঘামের গন্ধ আমার কাছে আপন। আমার কাছে অতি চেনা। আপাতত দেশেই আছি। দেশেই থাকতে চাই। দেশের বাইরে আমার সন্তান আছে, পুত্রবধূ আছে, নাতি আছে। ওদের সঙ্গে অনেক দিন কাটিয়ে এসেছি । কিন্তু সবার আগে আমার দেশ।

অভিনয় কী কমিয়ে দিয়েছেন?

মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছে। কিছুদিন শরীর ভালো না থাকার কারণে অভিনয় কম করেছি । সম্প্রতি আজিজুল হাকিমের পরিচালনায় একটি ঈদের টেলিফিল্মে অভিনয় করেছি । সেতু আরিফের পরিচালনায় একটি ঈদের নাটক করেছি। ধারাবাহিক নাটকও করছি। ঈদের পর একটি ধারাবাহিকের শুটিং শুরু করব। এখন শরীরের সঙ্গে মানিয়ে অভিনয় করতে হয় । বয়স বাড়ছে। শরীর যতটুকু সহ্য করতে পারে, সেভাবেই অভিনয় করতে চাই। অভিনয় আমার ভালোবাসা। কয়েক যুগ ধরে অভিনয় করছি। তাই চাইলেই দূরে থাকা যায় না ।

ডলি জহুর। ছবি: স্টার

সাড়া জাগানো নাটক এইসব দিনরাত্রির কথা মনে পড়ে?

অবশ্যই। এইসব দিনরাত্রি নাটকের কথা কখনোই ভুলতে পারব না। এইসব দিনরাত্রি নাটকে নীলু চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। নাটকটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল সবার মাঝে। এইসব দিনরাত্রি নাটকের নীলু ভাবির কথা এখনো দর্শকরা মনে রেখেছেন। টুনির কথা বলেন। আরও অনেকের কথা বলেন। মোস্তাফিজুর রহমান নাটকটির প্রযোজক ছিলেন। হুমায়ুন আহমেদের লেখা নাটক ছিল। আমার অভিনয় জীবনের সঙ্গে এই নাটকটি জড়িয়ে আছে।

এদেশের বিখ্যাত সব নাট্যপরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন, এখনকার তরুণ পরিচালকের সঙ্গেও নাটক করছেন- ২ প্রজন্মের মধ্যে কী পার্থক্য দেখেছেন?

অভিনয়ের ধারা তো একই আছে। পরিবেশ কিছুটা বদলেছে। সময় বদলে গেছে। মোস্তাফিজুর রহমান, মোস্তফা  কামাল সৈয়দ, আতিকুল হক চৌধুরীসহ তখন যত বড় বড় পরিচালক ছিলেন সবার সঙ্গে কম-বেশি অভিনয় করেছি । তারা গুণী মানুষ ছিলেন। এখন যারা নতুন বা তরুণ পরিচালক তাদের পরিচালনায়ও অভিনয় করছি। তরুণদের বিনয়ের সঙ্গে বলতে পারি- কাজটি এভাবে করলে ভালো হয়। বিখ্যাতদের এসব কথা বলার সাহস ছিল না। আমি মনে করি টেলিভিশন মাধ্যম ডিরেকটোরিয়াল মিডিয়া। একজন পরিচালক যেভাবে অভিনয় চাইবেন সেভাবেই অভিনয় করা উচিত।

অসংখ্য নাটক ও সিনেমাতে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এ ধরনের চরিত্রের সঙ্গে মিশে যেতে কতোটা ইমোশন কাজ করে?

মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের সময় প্রচণ্ড ইমোশনাল হয়ে পড়ি। আসলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নাটক-সিনেমায় চরিত্র করতে হয়। মায়ের চরিত্রে অনেকবার অভিনয় করেছি। এখনো করছি। নাটকে বা সিনেমায় মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের কারণে অনেক শিল্পী আমাকে মা  ডাকেন। জন্ম না দিয়েও আমি মা। এটা তো আবেগের বিষয়। একই পরিবার আমরা। কতোটা শান্তি পাই তা বলে বোঝাতে পারব না।

Comments