শর্মিলী দিদির কথা খুব মনে পড়ে, কষ্ট পাই: ডলি জহুর

শর্মিলী আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

গুণী অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন স্বাধীনতার আগেi। 'আবির্ভাব' তার অভিনীত প্রশংসিত একটি সিনেমা। 

আরও অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন তিনি একজীবনে। টেলিভিশন নাটকেও সমানভাবে অভিনয় করেছেন। শেষ দিকে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করে সবার ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা অর্জন করেন।

আজ ৮ জুলাই শর্মিলী আহমেদের প্রয়াণ দিবস। তাকে স্মরণ করে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত আরেক গুণী অভিনেত্রী ডলি জহুর।

ডলি জহুর বলেন, 'শর্মিলী আহমেদকে আমি দিদি বলে ডাকতাম। সহোদর না হয়েও একটুও কম ছিলেন না তিনি। ভীষণ স্নেহ করতেন আমাকে, ভালোবাসতেন খুব। আদর করতেন, মায়া করতেন। তার মতো করে কেউ মায়া করে না, ভালোবাসে না।'

'মাঝে মাঝে তার কথা ভাবি, খারাপ লাগে। শর্মিলী দিদির জন্য কষ্ট হয়, খুব মনে পড়ে তাকে। যখনই মনে পড়ে, তখনই মন খারাপ করে কত কী ভাবি। আর মনে মনে বলি, দিদির সঙ্গে আর কখনো দেখা হবে না,' বলেন তিনি।

ডলি জহুর বলেন, 'আমার স্বামী মারা যাবার পর দিদি প্রায়ই বলতেন, তুমি একা হয়ে গেলে। মন খারাপ করো না, আমরা আছি। সেই দিদি আমাকে রেখে নিজেই চলে গেলেন!'

শর্মিলী আহমেদের বাড়ি রাজশাহীতে। সেই বাড়িতেও গিয়েছেন ডলি জহুর। বলেন, 'তার বাবা সংস্কৃতিমনা মানুষ ছিলেন। রাজশাহীতে তাদের বাসায় যাওয়ার পর খুব খুশি হয়েছিলেন। তারপর তিনি একবার ঢাকায় এলেন মেয়ের বাসায়, তখনো আমি দেখা করেছি। মেয়ের মতোই দেখতেন আমাকে।'

ডলি জহুর আরও বলেন, 'শর্মিলী দিদি প্রায়ই এটা-ওটা রান্না করে আমার জন্য নিয়ে আসতেন। যেদিন আসতে পারতেন না, কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দিতেন। ভালো কিছু রান্না হলে তো কথাই নেই...দিদি চলে যাবার পর এই বিষয়গুলো ভাবি। সত্যিই অনেক মিস করি তাকে।'

'দিদি যখন "আবির্ভাব" সিনেমা করেন তখন আমি স্কুলে পড়ি। সেই সিনেমার বিখ্যাত একটি গান- "সাতটি রংয়ের মাঝে আমি নীল খুঁজে না পাই" কতবার যে শুনেছি, এ স্মৃতি ভোলার নয়,' বলেন তিনি।

দুজনের একসঙ্গে অভিনয় করারও অনেক স্মৃতি। আবুল হায়াতের পরিচালনায় একটি নাটকের কথা জানালেন ডলি জহুর। বলেন, 'ওই নাটকটির নাম সম্ভবত "শ্বেতপত্র"। নাটকটির শুটিং করতে গিয়ে দিদির কত ভালোবাসা ও স্নেহ পেয়েছিলাম তা ভুলতে পারব না।'
 
'প্রিয় মানুষটি আজ নেই, তার স্মৃতিগুলো আছে। মহান আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন,' বলেন ডলি জহুর।

২০২২ সালের ৮ জুলাই ভোরে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শর্মিলী আহমেদ।

মঞ্চ, টেলিভিশন নাটক ও সিনেমার প্রখ্যাত অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের প্রকৃত নাম মাজেদা মল্লিক। ১৯৪৭ সালের ৮ মে রাজশাহীতে তার জন্ম।

৪ বছর বয়সে মঞ্চে অভিনয় শুরু করেন শর্মিলী আহমেদ। ১৯৬২ সালে তিনি রেডিওতে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন।

শর্মিলী আহমেদ অভিনীত উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে—'মালঞ্চ', 'দম্পতি', 'আগুন', 'আবির্ভাব', 'পৌষ ফাগুনের পালা', 'মেহেরজান', 'আবার হাওয়া বদল (২০১৪)', 'বৃষ্টির পরে (২০০৫)', 'আমাদের আনন্দ বাড়ি (২০০৫)', 'আঁচল (২০০৬)', 'আগন্তুক (২০০৫)', 'ছেলেটি (২০১১)', 'উপসংহার (২০১০)' ইত্যাদি।

Comments

The Daily Star  | English

How Dhaka’s rickshaw pullers bear a hidden health toll

At dawn, when Dhaka is just beginning to stir, thousands of rickshaw pullers set off on their daily grind.

19h ago