কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ থেকে কিংবদন্তি ‘কেকে’

কেকে। ছবি: ইনস্ট্রাগ্রাম থেকে নেওয়া

বলিউডের আইকনিক গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। 'কেকে' নামেই বেশি পরিচিত। দিল্লির এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে ওঠে আসা 'কেকে' ছোটবেলা থেকেই প্রতিভাবান গায়ক ছিলেন। কখনোই ভাবেননি পেশাদার গায়ক হবেন, বলিউডের ব্লকবাস্টার প্লেব্যাক শিল্পী হবেন। কারণ, গানে তার শাস্ত্রীয় প্রশিক্ষণ ছিলেন না। নিজেকে সবসময় ভাগ্যদেবীর সন্তান মনে করতেন তিনি।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারী কেকে ছাত্রজীবন থেকে গানের অনুরাগী ছিলেন। তিনি ছিলেন কিশোর কুমারের একজন ডাইহার্ড ভক্ত। কৈশোরে হিন্দি বাদ দিয়ে ইংরেজি গানে বেশি মনোযোগী ছিলেন। তার বহুমুখী কণ্ঠস্বর দ্রুত জিঙ্গেলের জন্য দিল্লির বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার পছন্দের তালিকায় যুক্ত হয়। বন্ধুদের নিয়ে রক ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আরও ২টি রক ব্যান্ডে ড্রাম বাজাতেন, তবে সেখান কণ্ঠ দিতেন না।

গ্র্যাজুয়েশনের পরে কেকে বিপণন নির্বাহী হিসেবে সংক্ষিপ্ত মেয়াদে চাকরি করেন। কিন্তু, ৮ মাস পর গানের টানে চাকরি ছেড়ে দেন। ১৯৯১ সালে তার শৈশবের বান্ধবী জ্যোতিকে বিয়ে করার পর ১৯৯৪ সালে মুম্বাইয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কেকে লুই ব্যাংকস, রঞ্জিত বারোট, শিব মাথুর ও লেসলি লুইসের মতো সংগীত কিংবদন্তিদের সঙ্গে দেখা করেন।

ইউটিভি তাকে প্রথম জিঙ্গেলে লেসলি লুইসের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়। কেকে ১১টি ভারতীয় ভাষায় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি জিঙ্গেল গেয়েছিলেন।

বিশাল ভরদ্বাজ এই নতুন প্রতিভাকে কাজে লাগাতে চাইলেন। তিনি তাকে গুলজারের হিট 'ছোড় আয়ে হাম ওহ গালিয়ান' দিয়ে মাচিসে হিন্দি সিনেমায় সুযোগ দেন। ভরদ্বাজ তাকে প্রথম সোলো অ্যালবাম 'হাম পাঞ্চি এক ডাল কে'তে সুযোগ দেন।

১৯৯৯ সালে কেকে সনি মিউজিকের অধীনে একক অ্যালবাম 'পাল'র জন্য সেরা গায়ক হিসেবে স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড পান। তিনি 'পাল'র জন্য তার মেন্টর লেসলি লুইসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। যা তার ট্রেডমার্ক অ্যালবামে পরিণত হয় এবং তার সব কনসার্টে এই আবশ্যক হয়ে উঠে।

'তাড়াপ তাড়াপ কে ইস দিল সে আহ নিকালতি রাহি?' (হাম দিল দে চুকে সনম) ও 'স্বপ্নে' এ আর রহমানের সঙ্গে 'স্ট্রবেরি আঁখেন' গানগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। 'পাল'র মতো 'তাদাপ তাদাপ' আরেকটি জনপ্রিয় গান হয়ে ওঠে যা ছাড়া তার কোনো কনসার্ট সম্পূর্ণ হতো না।

কেকে অল্প সময়ের মধ্যে হিন্দিতে প্রায় ৫০০ গান এবং তেলেগু, তামিল ও কন্নড় ভাষায় শতাধিক গানে কণ্ঠ দেন। তিনি বিভিন্ন কর্পোরেট গিগস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ভারত ও বিদেশে ১২০টির বেশি পাবলিক কনসার্টে পারফর্ম করেন। এটি অবশ্যই একজন গায়কের জন্য উল্লেখযোগ্য অর্জন।

কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী কিশোর কুমার ছিলেন কেকের আইডল। কিন্তু, কিশোর কুমারের মতো প্রশিক্ষিত গায়ক ছিলেন না তিনি। তাই কেকে নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান মনে করতেন। কারণ গান না শিখেও গানকে পেশা হিসেবে নিতে পেরেছিলেন তিনি। কিশোর কুমার ছাড়াও রাহুল দেব বর্মণের ভক্ত ছিলেন কেকে।

বিখ্যাত গায়ক এই গায়ক ১৯৬৮ সালের ২৩ আগস্ট দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। দিল্লির মাউন্ট সেন্ট মেরি স্কুল থেকে স্কুলজীবন শেষ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন। ছোটবেলা থেকেই গানের শখ ছিল। দ্বিতীয় শ্রেণি থেকেই মঞ্চে গান গাইতেন।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, ডিএনএ

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

10h ago