আইনবিরোধী বয়ান দিবেন না: ইমামদের প্রতি হাইকোর্ট
“একজন ইমামের দায়িত্ব হল মুসল্লিদের নামাজ পড়ানো এবং ইসলামের জ্ঞান দেওয়া। ইমাম সাহেবরা এমন কোন বয়ান দেবেন না যেটা প্রচলিত আইন বহির্ভূত।” ব্লগার আহমেদ রাজীব হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রেখে রায়ের পর্যবেক্ষণে আজ এসব কথা বলেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রাজীব হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ডসহ অন্য ছয় আসামীর সাজা বহাল রাখেন। এই ছয় জনের মধ্যে বয়ানের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসিমুদ্দিন রাহমানীর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, “যদি কেউ ইসলাম, নবী (সঃ) কিংবা অন্য কোন ধর্ম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন বা ফেসবুকে পোস্ট দেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। মনে রাখতে হবে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারও নেই।”
“এই হত্যা মামলার এভিডেন্স (সাক্ষ্য) ও আর্গুমেন্ট (যুক্তি তর্ক) থেকে দেখা যায় মুফতি (মুফতি জসিমুদ্দিন রাহমানী) বাদে বাকি সাত জন মেরিটরিয়াস স্টুডেন্ট। কিন্তু তারা কেন এই পথে গেলেন সেটা আমরা খুঁজে পাইনি।”
সন্তানদের সঠিক পথে রাখতে অভিভাবকদের দায়িত্ববান হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন আদালত।
আদালত আরও বলেন, “আমাদের অনেক গার্ডিয়ান নিজেদের লাইফস্টাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বাচ্চাদের মানসিকতা বিবেচনায় না নিয়ে এ্যারোস্ট্রোক্রেসি মেইন্টেইন করার জন্য যেকোনো পড়াশোনা তাদের উপর চাপিয়ে দেই।”
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলার সময় ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে নিজ বাসার সামনে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ফেসবুকে ‘থাবা বাবা’ ছদ্ম নামে ধর্মীয় মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করতেন তিনি।
আনসারুল্লাহ প্রধান মুফতি জসিমুদ্দিন রহমানী ধানমন্ডির হাতেমবাগ মসজিদের খতিব ছিলেন। এরপর তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুরের বছিলায় মারকাজুল উলুম আল ইসলামিয়া নামে একটি মাদ্রাসা ও একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। বয়ানের মাধ্যমে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে এই জঙ্গি নেতার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ব্লগার রাজীব হত্যায় রানা ও দ্বীপের মৃত্যুদণ্ড বহাল
Comments