এবার গবাদি পশুর মৃত্যুতে সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে আতঙ্ক
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় হাওরের পানিতে ডুব দিয়ে ঘাস খাওয়ার সময় একই মালিকের ছয়টি মহিষ মারা গেছে। উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের বাতিরকান্দি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার বাতিরকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল কাহার (কালা মিয়ার) পুত্র লিলু মিয়ার তিনটি মহিষ মারা যাওয়ার একদিন পর তাঁর আরও তিনটি মহিষ মারা যায়। মহিষগুলো চিরাচরিত নিয়মে গ্রামের পার্শ্ববর্তী নাইন্দার হাওরে পানিতে ডুব দিয়ে ঘাস খেতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যায়।
এ ব্যাপারে লিলু মিয়ার চাচাতো ভাই গোলাম মোস্তফা ও আলতাফ মিয়া তালুকদার জানান, সাতটি মহিষের মধ্যে ছয়টিই মারা যাওয়ায় পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পশু চিকিৎসক ডাক্তার আবদুস শহিদ হোসেন বলেন, “দুষিত কোন পদার্থের জন্যেই এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আরও উচ্চ পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।”
প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার ছাইফুল ইসলাম জানান যে মৃত পশুর রক্ত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জ জেলার সবকয়টি হাওরের ধান হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন হাওরবাসী। প্রথমে ধান, পরে মাছ ও হাঁস মরে যায়। এখন গরু-মহিষসহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্কের প্রহর গুনছেন জেলার জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী।
মঙ্গলবার উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ভূরাখালি গ্রামে দুটি গরু মারা যায়।
গরু দুটির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, “এ সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে কি কারণে গরুগুলো মারা গেছে সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত করব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গরুসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশুর ব্যাপক খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। এসব খাদ্যের চাহিদা মেটাতে নলুয়ার হাওর থেকে বিভিন্ন জাতের “ভটভটি” নামক ঘাস তুলে এনে গরুসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশুর খাদ্যের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। কিন্তু এসব খাদ্য খেয়ে এই দুটি গরু মারা গেছে।
স্থানীয়দের ধারণা, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় গরুগুলোর মৃত্যু হতে পারে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার কামরুল আহমদ খাঁন বলেন, “গৃহপালিত পশুর খাদ্য সংকট হওয়ায় গরুগুলোকে সোমবার সারাদিন ভটভটি ঘাস খেতে দেওয়া হয়। ওই ঘাসে বিষাক্ত কিছু থাকায় গরুগুলো পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গরুগুলোর মধ্যে দুটি গরু মারা গেছে।”
Comments