করোনায় উ. কোরিয়ায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু

উত্তর কোরিয়ার এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বাসকে জীবাণুমুক্ত করছেন। ছবি: কেসিএনএ
উত্তর কোরিয়ার এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বাসকে জীবাণুমুক্ত করছেন। ছবি: কেসিএনএ

বিশ্বের অন্যান্য দেশে যখন করোনা প্রাদুর্ভাব কার্যত শেষ হয়ে যাওয়ার পথে, ঠিক সে সময়েই করোনার ঢেউ তীব্র আকারে আছড়ে পড়েছে উত্তর কোরিয়ায়। 

দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম কোরিয়া হেরাল্ড জানায়, আজ রোববার করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ১৫ জনের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। এ ছাড়াও, সারাদেশে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১৮০ জন আক্রান্তের কথা জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের তথ্য জানান দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এই ১৫ জনের মৃত্যু হয়, এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ'র তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত ৮ লাখ ২০ হাজার ৬২০ জনেরও বেশি মানুষের মধ্যে 'জ্বরের উপসর্গ' দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩০ জন সুস্থ হয়েছেন এবং আরও ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৫০ জন এখনো চিকিৎসাধীন।

কেসিএনএ 'জরুরি রাষ্ট্রীয় মহামারি প্রতিরোধ সদর দপ্তরের' বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে করোনাভাইরাস রোগীর পরিবর্তে 'জ্বরে আক্রান্ত রোগী' শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, করোনা টেস্টিং কিট ও রোগ শনাক্তের অন্যান্য উপকরণের অভাবে এ কৌশল নেওয়া হয়েছে।

কেসিএনএ জানায়, করোনার বিস্তার ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জরুরি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী, অনেক রোগী ওমিক্রন ধরন ও এ রোগের সঠিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবে ঠিকমত ওষুধ গ্রহণ করেননি। ফলে ব্যক্তিগত পর্যায়ের অবহেলার কারণেই মূলত অনেকে মারা গেছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, 'দেশের সব প্রদেশ, শহর ও জেলাকে পুরোপুরি লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। ১২ মে সকাল থেকে সব কর্মক্ষেত্র, কারখানা ও আবাসিক অঞ্চলকে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে এবং দেশের সব নাগরিকের কঠোর ও পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা চলছে।'

কেসিএনএ আরও জানায়, মহামারি মোকাবিলায় দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তাদের ব্যক্তিগত মজুত থেকে ওষুধ দান করেছেন।

শনিবার উত্তর কোরিয়ায় দ্রুতগতিতে ছড়ানো করোনা প্রাদুর্ভাবকে একটি 'মহাবিপর্যয়' বলে উল্লেখ করেছেন দেশটির নেতা কিম জং উন।

কোরিয়ার নেতা কিম জং উন
কোরিয়ার নেতা কিম জং উন পিয়ংইয়ং এ অবস্থিত জরুরি রাষ্ট্রীয় মহামারি প্রতিরোধ সদর দপ্তর থেকে করোনাভাইরাসের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করেন। ছবি: উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম

সে দেশের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, শনিবার এক জরুরি বৈঠকে করোনা মোকাবিলায় সর্বাত্মক লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন কিম।

দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তার প্রস্তাব

আজ দক্ষিণ কোরিয়ার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, করোনা মোকাবিলায় তারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপকে জানান, সরকার এ সপ্তাহের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি মাঠপর্যায়ের বৈঠকে আয়োজনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এ প্রস্তাবের খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পর দক্ষিণ কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর কোরিয়ার কাছে এ প্রস্তাব পাঠাবে।

বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ কোরিয়ার নবনিযুক্ত একত্রীকরণ মন্ত্রী কিওন ইয়ং সে সোমবার শপথ নেওয়ার পর এ উদ্যোগে গতি আসতে পারে।

উত্তর কোরিয়া এ প্রস্তাব গ্রহণ করলে এটাই হবে দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই কোরিয়ার মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা।

শুক্রবার ইউন উত্তর কোরিয়ায় করোনা টিকা ও অন্যান্য চিকিৎসা উপকরণ পাঠানোর প্রস্তাব দেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

4h ago