দেশজুড়ে শরিয়াহ আইন চালু হবে: আফগান নেতা

ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ধারণকৃত অডিও বার্তায় আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশজুড়ে শরিয়াহ আইন প্রচলনের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন।
তালেবান সর্বোচ্চ নেতা আখুন্দজাই। ফাইল ছবি: রয়টার্স
তালেবান সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ঈদ উল আযহা উপলক্ষে ধারণকৃত অডিও বার্তায় আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দেশজুড়ে শরিয়াহ আইন প্রচলনের অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন।

আজ আফগানিস্তানের সংবাদ মাধ্যম টলো নিউজের একটি প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে।

কান্দাহারের ঈদ-গাহ মসজিদে ঈদের নামাজের সময় আখুন্দজাদা আরও জানান, আগের সরকারের প্রতিষ্ঠিত যেসব আইন শরিয়াহ-ভিত্তিক নয়, সেগুলোকে বাতিল করা হবে।

তিনি বলেন, 'গত ২০ বছরে আশরাফ গনি ও (হামিদ) কারজাইর আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের তৈরি সব আইন ও নীতিমালাগুলো এখন বিশেষজ্ঞরা নিরীক্ষণ করবেন। যদি এগুলোতে এমন কিছু পাওয়া যায় যা শরিয়াহ বিরোধী বা জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী, তাহলে সেগুলোকে প্রত্যাহার করা হবে এবং পরিবর্তে আমরা পূর্ণ ইসলামী ব্যবস্থা চালু করবো।'

এ ঘোষণা এমন সময়ে এলো, যখন প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ বিদেশী বসবাসকারী আফগানদের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধিতা না করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি তাদেরকে ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানের (তালেবানের দেওয়া আফগানিস্তানের নতুন নাম) ঘোষণা করা সাধারণ ক্ষমার সুবিধা নিতেও উদ্বুদ্ধ করেন।

তালেবান প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
তালেবান প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে আপনাদের সুবিধার জন্য একটি কমিশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপনারা কেনো এই জগতের (আফগানিস্তানের) সঙ্গে যোগসূত্র ছিন্ন করতে চান? আপনারা কী চান?'

আফগানিস্তানের এই নেতা আরও জানান, বিদেশ থেকে যারা দেশে ফিরে আসবেন, তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। তালেবান প্রধানমন্ত্রীর মতে, শরিয়াহ আইন চালু করার পথ সুগম হয়েছে।

তিনি দেশের জনগণকে বর্তমান শাসনব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানানোর আহ্বান জানান।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, এ যাবত তালেবান সরকার তাদের কথা অনুযায়ী কাজ করে দেখাতে পারেনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাভিদ সান্দেল বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসলামী আইন বা সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়। তবে এ ক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ পর্যন্ত তালেবান দেশ পরিচালনার কোনো সুষ্ঠু প্রক্রিয়া চালু করতে পারেনি। তাদের সরকারে জনগণের অংশগ্রহণ নেই বা তারা জনগণের সরকারও নয়।'

প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ তার ঈদ শুভেচ্ছা বার্তায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিশ্চয়তা দেন, অপর কোনো দেশের বিরুদ্ধে কোনো উদ্যোগে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার হবে না।

'সঙ্গে ইসলামিক আমিরাত এটাও প্রত্যাশা করে, যে বাইরের কোনো শক্তি আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে নাক গলাবে না', যোগ করেন তিনি।

২০২১ সালের আগস্ট মাসে বিনা রক্তপাতে রাজধানী কাবুল দখলের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। এরপর থেকেই তাদের বিভিন্ন নীতিমালার সমালোচনা করছে পশ্চিমা বিশ্ব। আজও নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্বের বেশিরভাগ রাষ্ট্র।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আবারও তাদের প্রশাসনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিদেশি সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

 

Comments