‘অধ্যক্ষকে মারার পর ভয় দেখিয়ে আবার উল্টো কথা বলানো বেশি ভয়ংকর’

কবি কাজী কাদের নেওয়াজের ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতা কমবেশি সবারই জানা। কবিতার কিছু পঙক্তি এরকম—বাদশাহ্ কহেন, “সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে/নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন/পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ/নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে/ধুয়ে দিল না’ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।” মোগল বাদশাহ আলমগীর শিক্ষকের মর্যাদাকে এই পর্যায়ে আসীন করেছিলেন।
teacher_assault-01-02-01.jpg
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

কবি কাজী কাদের নেওয়াজের 'শিক্ষাগুরুর মর্যাদা' কবিতা কমবেশি সবারই জানা। কবিতার কিছু পঙক্তি এরকম—বাদশাহ্ কহেন, "সেদিন প্রভাতে দেখিলাম আমি দাঁড়ায়ে তফাতে/নিজ হাতে যবে চরণ আপনি করেন প্রক্ষালন/পুত্র আমার জল ঢালি শুধু ভিজাইছে ও চরণ/নিজ হাতখানি আপনার পায়ে বুলাইয়া সযতনে/ধুয়ে দিল না'ক কেন সে চরণ, স্মরি ব্যথা পাই মনে।" মোগল বাদশাহ আলমগীর শিক্ষকের মর্যাদাকে এই পর্যায়ে আসীন করেছিলেন।

সমাজে একজন শিক্ষকের অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ধর্ম-বর্ণ, জাত-পাত সবকিছুর ঊর্ধ্বে। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনা তো ঘটেছেই, এমনকি শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যাও করা হয়েছে। সর্বশেষ রাজশাহীর সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে স্থানীয় এক কলেজের অধ্যক্ষকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল যদিও সংবাদ সম্মেলনে ওই অধ্যক্ষ বলেছেন, সংসদ সদস্য তাকে মারেননি। কিন্তু, স্থানীয়রা বলছেন, সংসদ সদস্যের ভয়ে বাধ্য হয়েই তিনি এখন এ কথা বলছেন।

একজন সংসদ সদস্য একজন অধ্যক্ষকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার পরে আবার সংবাদ সম্মেলনে ওই অধ্যক্ষ যে তা অস্বীকার করলেন, এ ঘটনা থেকে কী বার্তা পাওয়া যায়? এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টার কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েনের সঙ্গে।

তাদের মতে, একজন অধ্যক্ষকে মারধর করার পরে ভয় দেখিয়ে তা অস্বীকার করতে বলার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। এর মাধ্যমে সমাজ আরও কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেল। এ ধরনের ঘটনাই প্রমাণ করে যে, দেশে শিক্ষার মান তলানিতে এসে ঠেকেছে। পাশাপাশি সমাজে নেই কোনো ন্যায্যতা-জবাবদিহিতা।

একজন অধ্যক্ষকে মারা যেমন অপরাধ, ভয় দেখিয়ে তাকে দিয়ে উল্টো কথা বলানো তারচেয়েও বড় অপরাধ বলে মনে করেন অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, 'একজন শিক্ষককে মারার পর ভয় দেখিয়ে আবার উল্টো কথা বলানো আরও বেশি ভয়ংকর। ভয়ের একটা সংস্কৃতি তৈরি করা হলো। মারধর করবে, কিন্তু বিচার চাওয়া যাবে না। এই যে একটা সংস্কৃতি যোগ হলো, এর মাধ্যমে সমাজ আরও কয়েক ধাপ নিচে নেমে গেল। ওই শিক্ষকের তো ক্ষমতা নেই। আজ থেকে ৩০ বছর আগে কেউ একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তুলত না। কেউ যদি তোলার সাহস দেখাত, তখন শিক্ষকদের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ করতেন। এই যে এখন আমাদের শিক্ষকরা রাজনীতি করেন, শিক্ষার্থীরা করেন, কী জন্যে করেন? কোথায় তারা? এই শিক্ষক যে মার খেলেন, কীভাবে তার প্রতিবাদ করা সম্ভব যেখানে সমাজ চুপ করে আছে? আমাদের শিক্ষক সমিতি কোথায়? শিক্ষক নেতারা কোথায়? বাংলাদেশজুড়ে যে শিক্ষার্থীরা আছেন, তারা কোথায়?'

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের ভাষ্যমতে, 'অন্য যে কোনো পেশার চেয়ে শিক্ষকতা আলাদা। কারণ, জ্ঞানও পানির মতো প্রবাহিত হয়। প্রবাহিত হওয়ার জন্য একটা ঢাল লাগে। পানি প্রবাহের জন্য যেমন উঁচু-নিচু ঢাল লাগে, তেমনি জ্ঞান প্রবাহের জন্য লাগে সম্মানের ঢাল। অর্থাৎ শিক্ষককে উচ্চস্থানে না বসালে শিক্ষার্থীর মধ্যে জ্ঞানটা আসবে না। আমাদের সমাজটা এখন এমন এক জায়গায় চলে গেছে যে, শিক্ষককে আর উচ্চস্থানে বসাতে চায় না। যেজন্য জ্ঞানের প্রবাহের সেই অবস্থাও এখন নেই। সমাজের মানুষরাও কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করছে না।'

'দলীয় নেতা-কর্মীরা কোথায়? তারা কেন কোনো কথা বলছে না? তার মানে সবারই সায় আছে, সবারই দায় আছে। সমাজ এখন এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে জ্ঞানের প্রবাহের মতো অবস্থা আর নেই। গত ২ মাসে শিক্ষকদের লাঞ্ছনা ও মেরে ফেলার যে ঘটনা আমরা দেখেছি, এতে বোঝা যায় সমাজ কোনদিকে যাচ্ছে। রাজশাহীর ওই অধ্যক্ষ তো একা। সুতরাং এমপি যেভাবে চায়, সেভাবে না করে তিনি থাকতে পারবেন? তারও তো পরিবার আছে। তার সন্তান আছে', যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, '৯০ সালে স্বৈরাচার পতনের পর একটা সিদ্ধান্ত হলো যে, জনপ্রতিনিধিরা স্কুল-কলেজের কমিটির দায়িত্বে থাকবেন। সেখান থেকে ধস নামার শুরু। তারা কী করে? বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে তাদের লোকদের শিক্ষক বানায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তারা তাদের লোকদের শিক্ষক বানায়। ফলে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। যে কারণে শিক্ষকদের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ দেখি না। তারা নেতা, আমলাদের বাসায় গিয়ে বসে থাকে। এই যে আত্মসম্মান বোধহীন লোকদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলো, এর মাধ্যমে শিক্ষকদের অবস্থান আরও নিচে নামিয়ে ফেলা হলো। এটার শেষ কোথায়? দেশে শিক্ষার মান তো কমছেই, এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।'

অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, 'সমাজের কোনো পর্যায়ে ন্যায্যতা নেই। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র বা সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের সমর্থন থাকা উচিত, সেটা নেই। একজন শিক্ষক যখন এ ধরনের বিপদে পড়লেন, তখন তার সুরক্ষার জন্য কেউ এগিয়ে আসলো না। যেহেতু ওই এমপি সরকারি দলের, সেহেতু এই এমপিকে নিয়ে সরকারি দলের বক্তব্য থাকা উচিত ছিল। কিন্তু, সেটা তারা দিলো না। ফলে একজন শিক্ষক অসহায় হয়ে পড়লেন। এই অসহায়ত্ব থেকেই তাকে ওই এমপির পাশে বসে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনাটি অস্বীকার করতে হলো নিজেকে রক্ষার জন্য। মানুষ কীরকম অসহায় বোধ করলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে! সামগ্রিকভাবে আমাদের সমাজে কোথাও ন্যায্যতা নেই। সবকিছু প্রভাবশালীদের পক্ষে। সেটার প্রকাশ আমরা এই ঘটনার মধ্য দিয়ে দেখলাম। যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।'

দিনকে দিন এ ধরনের ঘটনা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক মদদপুষ্ট। সরকারের ছত্রছায়ায় তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। কেউ সরকারি দলে অন্তর্ভুক্ত হতে পারলে যা খুশি কিছু করার লাইসেন্স পেয়ে যায়। কোনো পর্যায়ে কোনো জবাবদিহিতা নেই। জবাবদিহিতাবিহীন শাসনব্যবস্থা থাকলে সমাজের সব স্তরে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে।'

অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খানের মতে, একজন শিক্ষকেরও আত্মসম্মানবোধ থাকা জরুরি। 'অনেক শিক্ষক ক্ষমতাসীনদের তোয়াজ করেন। শিক্ষক হিসেবে আমাদের যে ধরনের মূল্যবোধ ও নৈতিক অবস্থান থাকা উচিত, সে অবস্থানটা আমাদের নেই। সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলা শিক্ষকের সংখ্যা এখন একেবারেই নগণ্য। যার ফলে সমাজের কাছেও আমাদের অবস্থায় খুবই দুর্বল। এ কারণে প্রভাবশালীরাও জানে যে শিক্ষককে আঘাত করলে তার সুরক্ষার জন্য সমাজের অন্যান্য অংশ এগিয়ে আসবে না। সেই সুযোগটা নিয়েই এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করা হয়', বলেন তিনি।

শিক্ষক সমিতিগুলো এখন সরকারি দলেরই অংশ বলে উল্লেখ করে ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, 'কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিতে এখন যারা নেতৃত্বে আসেন, তারা সবাই একটা আকাঙ্ক্ষা থেকে এখানে আসেন। সেটা হলো সরকারি দলের সঙ্গে থাকলে তারা একটা বড় পদ পাবেন, সুবিধা পাবেন। এখন এরকম আকাঙ্ক্ষা থেকে নেতৃত্বে এলে স্বাভাবিকভাবেই তাদের স্বাধীন কোনো সত্ত্বা থাকে না। তাদের অবস্থানও সরকারি দলের মতো হয়। ফলে স্বাধীন অস্তিত্বটা তাদের নেই। ফলে তাদের যে ধরনের ভূমিকা পালন করা উচিত, সেটা করার আগে তারা চিন্তা করে যে, সরকার তাদের ওপর নাখোশ হবে কি না।'

একজন শিক্ষক কতটা অসহায়, রাজশাহীর ঘটনার মাধ্যমে সেটাই বোঝা যায় বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন। তিনি বলেন, 'আগে একজন অধ্যক্ষ সামাজিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একজন ছিলেন। সব সামাজিক অনুষ্ঠান, সালিশে তাদের নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু, গভর্নিং বডি বলে একটা জিনিস ঘটেছে এবং সেখানে এমপিদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধু এবারই না, এর আগেও আমরা নারায়ণগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তির সময়েও একই ঘটনা দেখেছি। তখন সেই এমপির তো বিচার হয়নি। এবার রাজশাহীতে যা ঘটল, ওই এমপি অধ্যক্ষকে শুধু মারধর করেনি, যখন ঘটনাটা জানাজানি হয়ে গেল, তখন চাপ দিয়ে তাকে দিয়ে উল্টো কথা বলানো হচ্ছে। তার মানে ওই শিক্ষক কতটা পরাধীন। কতটা ভয়ের রাজত্বে তিনি বসবাস করছেন। একজন শিক্ষককে মারধর করা হলো, আবার ভয় দেখিয়ে উল্টো কথা বলানো হলো, বিষয়টি কতটা ভয়ংকর!'

নির্বাচনে সঠিকভাবে ভোট হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'রাজশাহীর এমপিরটা আমি জানি না। কিন্তু, বেশিরভাগ এমপিই তো আসলে নির্বাচিত না। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তারা ক্ষমতায় এসেছে। তাদের জবাবদিহিতারও কোনো জায়গা নেই। সঠিকভাবে ভোট হলে তো জবাবদিহিতার প্রশ্ন আসে। ভোট তো হচ্ছে না। ফলে এটা এক ধরনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো হয়ে গেছে। তারা মনে করছেন তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ এবং তারা যাকে যা খুশি তাই করতে পারেন। ঠিক সেই কাজটিই তারা করছেন।'

ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, 'টাকার অঙ্কে শিক্ষকরা খুবই কম বেতন পান। যে সামাজিক সম্মানটুকু ছিল, সেটাও এমন এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে, আমি মনে করি এটা ভয়ংকর বার্তা দিচ্ছে। তরুণ-মেধাবীরা ভবিষ্যতে আর এই পেশায় আসবে কি না, সেটা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, টাকা তো নেই-ই, যেই সামাজিক সম্মানটুকু ছিল, তাও নেই। উল্টো মার খেতে হচ্ছে। আবার মার খেয়েও মাথা লুকিয়ে ফেলতে হচ্ছে, বলতে হচ্ছে মার খাইনি।'

ঘটনাটির যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'গণমাধ্যমে দেখেছি, এই এমপির এই ধরনের কাজের ইতিহাস আছে। কাজেই এবারের ঘটনাটা খুব ভালোভাবে তদন্ত করা উচিত। একজন অধ্যক্ষ, যাকে মানুষ শ্রদ্ধা করবে, সেই শ্রদ্ধার জায়গা থেকে তাকে ভয়ও পাবে, সেই মানুষটি এতটা অসহায়। এখন শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষককে সম্মান করবে না। কারণ, তাদের সামনে শিক্ষক মার খাচ্ছেন। উল্টো ভয়ের চোটে তাকে মিথ্যা বলতে হচ্ছে। এগুলো সমাজের জন্য একটা ভয়ংকর বার্তা। সরকার বা বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? তারা চুপ করে আছে। এরকম চলতে থাকলে তা জাতির জন্য অশনিসংকেত। শিক্ষকতা যে সম্মানের বিষয়, সেই বোধটাই ধীরে ধীরে উঠে যাবে। শিক্ষার্থীরাও কাউকে দেখে নিজেদের শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে পারবেন না।'

শিক্ষক সমিতির ভূমিকা নিয়ে অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন বলেন, 'শিক্ষক সমিতিগুলো বিবৃতি দেয়। কিন্তু, তাতে কিছু যায়-আসে না। কারণ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে যখন এমন মৃদু একটা বিবৃতি দেয়, যার কোনো ক্রোধ নেই, শক্ত অবস্থান নেই, এটা চক্ষুলজ্জার জন্য দেওয়া হয়। শিক্ষক সমাজের সেই গাটস এখন নেই যে, তারা সরকার দলীয় এমপির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে একটা বিবৃতি দিয়ে সত্যিকার অর্থে বিচার চাইবে। আমার ধারণা, আমাদের শিক্ষক সমিতিগুলো সেই মনের জোর, নৈতিক অবস্থা হারিয়ে ফেলেছে।'

Comments