সন্তানের জন্য দুধ নিয়ে যাওয়া হলো না ডা. বুলবুলের

রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত দন্ত চিকিৎসক আহমেদ বুলবুলের রংপুরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
সন্তানের শোকে বুলবুলের মা বারবার মনে করছেন ছেলের সঙ্গে শেষ কথোপকথন।
বুলবুলের মা বুলবুলি বেগম বলেন, 'গতকাল রাতে বিকাশে দুই হাজার টাকা পাঠিয়ে দুধ কিনে রাখতে বলেছিল। দুই একদিনের মধ্যেই বাড়িতে আসবে বলেছিল বুলবুল। বাড়িতে এসে সেই দুধ নিয়ে যাবে বাচ্চাদের জন্য। কিন্তু তা আর হলো না।'
ছেলের খুনি যেই হোক তাকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এই মা।
ডা. বুলবুলের বাড়ি রংপুর নগরীর ভগিবালাপাড়ায়।
বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। চাকরি করাকালীন ১৯৯৯ সালে মারা যান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন বুলবুল।
১৯৯৭ সালে রংপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকার মগবাজারে একটি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পড়াশোনা শেষ করে প্রাকটিস শুরু করেন। দিনাজপুরে বিয়ে করে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকার শেওড়াপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। দেড় বছর বয়সী ছেলে ও ৮ বছরের মেয়ে রয়েছে বুলবুলের।
কী কারণে বা কেন এ হত্যাকাণ্ডের শিকার বুলবুল তা বুঝে উঠতে পারছেন না স্বজনরা।
বুলবুলের ছোট ভাই বকুল বলেন, সকালবেলা ফোনে খবর পাই ভাইকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।
ভাইয়ের সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল না। কেন তাকে হত্যা করা হয়েছে তা বুঝে উঠতে পারছি না । যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বকুল।
ছোট বোন লাভলী সামাদ বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বড় ভাই বুলবুল।
চিকিৎসাপেশার পাশাপাশি ঠিকাদারি করতেন। ঠিকাদারি কাজে আজ নোয়াখালী যাওয়ার কথা ছিল। এখন ভাই নেই। দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা কীভাবে দিন পার করবেন।
স্বজনসহ প্রতিবেশিরা এই হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান।
Comments