আমি আর দেশে ফেরত যাব না: নেদারল্যান্ডসে গিয়ে ‘নিখোঁজ’ কনস্টেবল রাসেল

সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়া সিএমপির ২ কনস্টেবলের একজন রাসেল চন্দ্র দে। দুবাই প্রবাসী ভাই সুভাষ চন্দ্রকে তিনি ফোনে জানিয়েছেন যে তিনি এখন নেদারল্যান্ডসে আছেন এবং দেশে ফিরতে চান না।
রাসেল চন্দ্র দে। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে 'নিখোঁজ' হয়ে যাওয়া সিএমপির ২ কনস্টেবলের একজন রাসেল চন্দ্র দে। দুবাই প্রবাসী ভাই সুভাষ চন্দ্রকে তিনি ফোনে জানিয়েছেন যে তিনি এখন নেদারল্যান্ডসে আছেন এবং দেশে ফিরতে চান না।

রাসেলের বোন কমলা পাল রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে এ কথা জানান।

কমলা পাল বলেন, 'রাসেল আমাদের বড় ভাইকে ফোন করে বলেছেন তিনি নেদারল্যান্ডসে থেকে গেছেন, আর ফিরতে চান না। একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কিছুদিন আগে ফোন করে তিনি ভাইয়ের কাছে টাকা চান। কিন্তু দাদা টাকা দিতে রাজি হননি এবং তাকে দেশে ফিরতে বলেন।'

'এক পর্যায়ে রাসেল ফোন কেটে দিয়ে নম্বর ব্লক করে দেন,' বলেন কমলা পাল।

রাসেল ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। তাদের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পলাইন্না কাটা গ্রামে এবং বাবা একজন ব্যবসায়ী।

কক্সবাজার সিটি কলেজে পড়ার সময় রাসেল চাকরি পান এবং কক্সবাজার জেলা থেকে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে যোগ দেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, তিনি বিবাহিত এবং তার একটি সন্তান আছে।

কমলা পাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাসেল ফোনে তার স্ত্রীকে বলেছিলেন যে তিনি পরিবারের জন্য কেনাকাটা করেছেন। বউকে তিনি ভিডিও কলে শপিংয়ে কেনা জিনিসপত্র দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তার এমন না আসার পরিকল্পনার কথা বলেননি।'

তিনি বলেন, 'ঘটনার পর কক্সবাজার পুলিশ সুপার অফিসে আমার বাবা এবং মাকে ডাকা হয়। আমরা আসলে এই ঘটনায় বিব্রত এবং কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না।'

'আমরা জানিও না রাসেল এখন কোথায় আছে, কেমন আছে,' বলেন কমলা।

'নিখোঁজ' কনস্টেবল শাহ আলম

রাসেলের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসে 'নিখোঁজ' হওয়া আরেক কনস্টেবল শাহ আলমের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার বদ্দির খিল এলাকায়। তার বাবা পেশায় একজন রিকশাচালক এবং তার মা একজন গৃহকর্মী।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শাহ আলমের বাবা একজন রিকশাচালক এবং মা এক সরকারি কর্মকর্তার বাড়িতে কাজ করেন।'

শাহ আলম ২০১৮ সালে এসএসসি পাশ করে পুলিশে যোগ দেন বলে জানান তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, শাহ আলমের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে তারা কিছু জানেন না। তিনি কয়েকদিন আগে একটি বিদেশি নম্বর থেকে তার বাবাকে ফোন করেছিলেন।

ওসি শুভ রঞ্জন জানান, শাহ আলম তার এলাকার ফ্রান্স ও পর্তুগালে বসবাসকারী বেশ কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন।

জানতে চাইলে সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (সদর) আমির জাফর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তাদের অবস্থান শনাক্তে কাজ করছি এবং দেশে ফেরত আনার চেষ্টা করছি।'

সিএমপি সূত্র জানায়, বায়েজিদ বোস্তামী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ বেলায়াত হোসেনের নেতৃত্বে ৮ পুলিশ সদস্যের একটি দল গত ৯ মে বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডসে 'কুকুরের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ' শীর্ষক ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নিতে যায়। 

২৪ মে রাসেল ও শাহ আলম ছাড়া দলের বাকি ৬ সদস্য দেশে ফিরে আসেন।

Comments