নেদারল্যান্ডে প্রশিক্ষণে গিয়ে ‘নিখোঁজ’ ২ পুলিশ কনস্টেবল

নেদারল্যান্ডে প্রশিক্ষণে যাওয়ার পর খোঁজ মিলছে না চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ২ কনস্টেবলের।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই ২ কনস্টেবল ১৫ দিনের আনুষ্ঠানিক এক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আরও ৬ পুলিশ সদস্যের একটি দলের সঙ্গে বিদেশে গিয়েছিলেন এবং পরে প্রশিক্ষণ শেষ করে ফিরে আসার আগের দিন গত ২২ মে থেকে 'নিখোঁজ' হন।

পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা নিশ্চিত নন যে ২ পুলিশ কনস্টেবল প্রশিক্ষণ শেষ করে বিদেশে পালিয়ে গেছেন, নাকি তারা কোনো ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ তাদের অবস্থান এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সিএমপির ৮ সদস্যের দলটি গত ৯ মে বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডে যায় এবং গত ২৪ মে ৬ জন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

খোঁজ না মেলা পুলিশ কনস্টেবলরা হলেন—রাসেল চন্দ্র দে ও শাহ আলম। রাসেলের বাড়ি কক্সবাজারে আর শাহ আলমের বাড়ি কুমিল্লায়। তারা সিএমপির ভদামপাড়া পুলিশ লাইনস ও মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনসের ব্যারাকে থাকতেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিরতি ফ্লাইটের ঠিক আগের দিন ওই ২ পুলিশ কনস্টেবল নিখোঁজ হন। আমরা জানি না আসলে কী হয়েছে। তাদের পাসপোর্টগুলো তাদের কাছেই আছে।'

'তারা বিদেশ থেকে পালিয়েছেন কি না, তা আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না। কারণ পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটাসহ তাদের সব জিনিসপত্র হোটেলেই ছিল। আমরা ইতোমধ্যেই দেশটির দূতাবাস ও পুলিশ সদর দপ্তরকে ঘটনাটি জানিয়েছি', যোগ করেন তিনি।

সিএমপি সূত্র জানায়, বায়েজিদ বোস্তামী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ বেলায়াত হোসেনের নেতৃত্বে ৮ পুলিশ সদস্যের দলটি চলতি মাসের প্রাক্কালে 'কুকুরের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ' শীর্ষক ১৫ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ নিতে নেদারল্যান্ডে যায়। ঢাকার মেসার্স রিফা এন্টারপ্রাইজ স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে এই প্রশিক্ষণ লিয়াজো করেছে।

সূত্র আরও জানায়, নগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম (সিটি) বিভাগের অধীনে একটি পূর্ণাঙ্গ ডগ স্কোয়াড (কে-৯) ইউনিট খোলা হচ্ছে। আর সেই ইউনিটের কার্যক্রম হিসেবেই দলটি প্রশিক্ষণে গিয়েছিল।

পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো ইউনিটটির অফিসিয়াল প্রস্তাব অনুসারে, সিএমপি দুটি ভিন্ন প্রজাতির ২০টি প্রশিক্ষিত কুকুর এখানে যোগ হবে। যার মধ্যে ৮টি জার্মান শেফার্ড ও ১২টি ল্যাব্রাডর।

প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউনিট পরিচালনার জন্য ৩৮ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ৪০ জন কর্মচারীর প্রয়োজন হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপি সদর দপ্তরের একজন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ কনস্টেবল সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণে অংশ নেন। ফিরতি ফ্লাইটের আগের দিন ২ জনেই ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়।'

'পরে তারা ফিরে আসেননি। অপেক্ষার পর, দলের অন্যান্য সদস্যরা ২৩ মে বিকেলে ফ্লাইটে ওঠেন এবং ২৪ মে তারা বাংলাদেশে ফেরেন', যোগ করেন তিনি।

ডিসি আরও বলেন, 'আমরা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। কিন্তু, তারা আমাদের বলেছে যে তারা কিছুই জানেন না।'

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-পুলিশ কমিশনার আমির জাফর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমের ডিসি ফারুক উল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডগ স্কোয়াড এখনো কাউন্টার টেররিজমের সঙ্গে যুক্ত হয়নি। সেটি এখনো সিএমপি সদর দপ্তরের অধীনে। ফলে এ বিষয়ে কাউন্টার টেররিজম কিছু জানে না।।'

তবে, এ বিষয়ে টিম লিডার এসি বেলায়েত হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Comments

The Daily Star  | English

'Extremism raising its head in Bangladesh'

Threat endangers the country’s very existence, Mirza Fakhrul says

27m ago