উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়া সেতুর সংস্কার হয়নি ৪ বছরেও

কুড়িগ্রাম সেতু
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামে ধসে পড়া সেতু। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

উদ্বোধনের আগেই বন্যায় ধসে যায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের ৪০ ফুটের সেতুটি। ২০১৮ সালে ধসে পড়া সেতুটির সংস্কার গত ৪ বছরেও হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীন নির্মিত সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল।

দ্য ডেইলি স্টারকে তারা জানান, বড়ভিটা ইউনিয়নের ৭ গ্রামের ৫ হাজারের বেশি মানুষের চলাচলের জন্য পূর্ব ধনিরাম খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এটি ধসে যাওয়ায় চলাচলে তাদের চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম সেতু
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

তারা আরও জানান, ড্রাম দিয়ে ভেলা বানিয়ে ঝুঁকি নিয়ে খাল পাড়ি দিতে হচ্ছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেতুটির নির্মাণকাজ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়ে শেষ হয় জুনে। সে বছরে ২২ আগস্ট বন্যায় সেতুটি ধসে পড়ে।

স্থানীয় ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। কাজ শেষ হওয়ায় তিনি পুরো বিল তুলে নিয়েছেন। এটি নির্মাণে খরচ হয়েছিল ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৬ টাকা।

পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক রোস্তম আলী (৬৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে সেতুটি খালের মধ্যে পড়ে রয়েছে। আমরা মনে করি, এটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল। এর ভিত্তিও ঠিকভাবে করা হয়নি।'

'অনেক দাবির পর আমরা সেতুটি পেয়েছিলাম' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এটি ধসে যাওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।'

একই গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম (৩৪) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সেতুটি নির্মাণের সময় পরিমাণে কম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদ করেছিলাম। তখন পিআইও সবুজ কুমার গুপ্ত আমাকে চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দিয়েছিলেন।'

'আমরা মনে করি, সেতুটি নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছিল,' যোগ করেন তিনি।

স্থানীয় কৃষক বাদশা মিয়া (৫৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পিআইও সবুজ কুমার গুপ্ত গ্রামবাসীকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে যেনতেনভাবে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করেন। আমরা খালের ওপর সেতু চাই। নিরাপদে চলাচল করতে চাই।'

গ্রামবাসীর অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার পানির প্রবল স্রোতে সেতুটি ধসে গেছে। ধসে যাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একাধিকবার এটি পরিদর্শন করেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'নতুন সেতুর জন্য বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ পেলে নতুন ডিজাইনে ওই খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

5h ago