মধুখালী ইউপি নির্বাচন: দলে সমন্বয়হীনতা, মনোনয়ন ত্রুটির কারণে নৌকার হার 

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ফরিদপুরের মধুখালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ৩টিতেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। যার মধ্যে এক প্রার্থী জামানতও হারিয়েছেন। ৯ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে তিনি সপ্তম হয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, যারা যোগ্য প্রার্থী তারা দলীয় মনোনয়ন না চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। পাশাপাশি দলে সমন্বয়হীনতার কারণে হেরে গেছেন প্রার্থীরা।

গতকাল বুধবার মধুখালী ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শাহ মো. ফারুক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দলে শৃঙ্খলা নেই, রয়েছে মতভেদ। নেতারা একসঙ্গে সভা করেছেন কিন্তু ভেতরে ভেতরে একেকজন অন্যের হয়ে কাজ করেছেন।'

জামানত হারানো আড়পাড়া ইউপি প্রার্থী সম্পর্কে তিনি বলেন, 'দেখা গেছে মনোনয়নের সময় তৃণমূল আওয়ামী লীগ ওই প্রার্থীর মনোনয়ন চেয়েছেন কিন্তু মনোনয়ন পাওয়ার পর তৃণমূল নেতারা তার পাশে ছিল না।

এ নির্বাচনে আড়পাড়া ইউপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আরমান হোসেন জামানত হারিয়েছেন। তিনি মাত্র ২২১টি ভোট পেয়েছেন। এই ইউনিয়নের ৯ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সপ্তম হয়েছেন। বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাদিকুর রহমান (মোটরসাইকেল)। তিনি ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৭৬২টি।

ডুমাইন ইউনিয়নে ২ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেখানে আনারস প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আসাদুজ্জামান ৩ হাজার ৮৫১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জেলা শ্রমিক লীগের সদস্য মো. খুরশিদ আলম (নৌকা) পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৬ ভোট।

মেঘচামী ইউনিয়নে নির্বাচত হয়েছেন বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য (চশমা) মো. সাবির উদ্দিন শেখ। তিনি পেয়েছেন ৪ হাজার ৪৭৪ ভোট। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাসান আলী খান (নৌকা) পেয়েছেন ২ হাজার ৬২৮ ভোট।

জামানত হারানো আড়পাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আরমান হোসেন বাবু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ বাকি দুটি ইউনিয়নে গিয়ে প্রচারণা চালালেও আমার ইউনিয়নে কোনো নেতা-কর্মী প্রচারণায় আসেননি। কেউ কেউ এলাকায় আসলেও কাজ করেছে আমার বিরুদ্ধে।' 

আড়পাড়ায় যে ইতিহাস রচিত হলো এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন তিনি।

মো. আরমান হোসেন বলেন, 'আমার পাশাপাশি এলাকার আরও ৪ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। আমি মনোনয়ন পেলেও তারা সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়। এ ব্যাপারে আমি উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েও কোনো সুফল পাইনি।'

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশরিয়াক আরিফ বলেন, 'মধুখালীর ফলাফল আমাদের জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা। নেতা-কর্মীদের মধ্যে সম্বয়হীনতা এবং মনোনয়নের ক্ষেত্রে ত্রুটি থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।'

মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বলেন, 'তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে, যোগ্য ব্যক্তিরা দলীয় মনোনয়ন না চেয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন। ফলে দল হেরে গেছে।'
 

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

6h ago