নির্বাচনের ঘোষণা ঐতিহাসিক, গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম করবে: বিএনপি

জাতির উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ভাষণে নির্দিষ্ট করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে 'ঐতিহাসিক' অভিহিত করে একে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রতিক্রিয়া জানান।
তিনি বলেন, 'বিএনপি মনে করে এই ঐতিহাসিক ঘোষণায় বাংলাদেশ রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম করবে।'
তিনি বলেন, বিএনপি আশা করে এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একটি কার্যকরী জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য বিএনপি সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।'
এই নির্বাচন অতি জরুরি উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এখন এই নির্বাচনটা দেশের জনগণই চায়। জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রহরী হয়ে দাঁড়াবে।'
গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের পর রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরে সকালে সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপির মহাসচিব। তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
'জুলাই ঘোষণাপত্র' নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, 'বিএনপি এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে, এই ঘোষণাপত্রে রাজনৈতিক দলগুলো অঙ্গীকার করেছে তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপান্তরের কাজ শুরু হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সত্যিকারের প্রগতিশীল সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রক্রিয়া।'
অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'প্রফেসর ইউনূস নিশ্চয়ই এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করে এসেছেন তাতে করে উনি প্রমাণ করেছেন যে, ভবিষ্যতেও তিনি নির্বাচনকে সুষ্ঠু অবাধ করার জন্য এমন কিছু করবেন না যা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।'
তারেক রহমান কবে দেশে আসবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, 'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আমরা ওয়েটিংয়ে আছি।'
জুলাই ঘোষণাপত্রের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ রয়ে গেল কিনা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, 'পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সংবিধানের যাবতীয় সংস্কার বা সংশোধনী বাস্তবায়ন করবে। এটাই আইন ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া।'
তিনি বলেন, 'এর বাইরে অন্য কোনো প্রক্রিয়ার কথা আমাদের জানা নেই। সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের আমাদের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনায় দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শেষে যে সমস্ত বিষয়ে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো সনদ আকারে 'জাতীয় সনদ জুলাই-২০০২৫' এই নামে সেটা সংকলিত করে সব পক্ষের স্বাক্ষরের জন্য দেবে। আমরা আগেই বলেছি যে, আমরা সেই স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত আছি।
'নির্বাচনের ঘোষণায় কেউ কেউ হতাশ'
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া হয়ত তারা এখনো তারা দেয়নি, তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতাশার কথা হয়েছে।'
'তবে আমরা আশা করব তারা একটি পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই গণতান্ত্রিক পথটাকে পরিষ্কার করবে,' বলেন তিনি।
Comments