মেগা প্রকল্পে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত নয় বরং ত্বরান্বিত হচ্ছে, সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশি আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত নয় বরং ত্বরান্বিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশি আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়িত মেগা প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত নয় বরং ত্বরান্বিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সব ক্ষেত্রে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন মোতাবেক প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। এসব প্রকল্পে বিদেশি অর্থায়ন থাকায় প্রকল্প সংক্রান্ত আমদানি ব্যয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্যে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না।'

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। 

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, 'প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নকালে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প কেন্দ্রিক অনেক ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প/ব্যবসা বাণিজ্য গড়ে উঠেছে। ফলে, পরোক্ষভাবে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা মূলত ব্যাহত হওয়ার পরিবর্তে ত্বরান্বিত হচ্ছে।'

মেগা প্রকল্প অনুমোদনের আগে যথাযথভাবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের বিরূপ প্রভাবের সম্ভাবনা নেই, যে কারণে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।'

অধিকাংশ বৈদেশিক ঋণের প্রকৃতি নমনীয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'ঋণের সুদের হার তুলনামুলকভাবে অনেক কম এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ও গ্রস পিরিয়ডও অনেক। ঋণের অর্থ অবমুক্তির ক্ষেত্রে বড় কোনো জটিলতা পরিলক্ষিত হয়নি।'

লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুসহ চলমান ১৬টি মেগা প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। এর মধ্যে তিনি ১৪টির প্রকল্প ব্যয়ের তথ্যও উপস্থাপন করেন

কিছু অসাধু ব্যক্তি নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুত ও মূল্য বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে

এ কে এম রহমতুল্লাহ'র প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অবনতি ঘটে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি ও সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে। দুঃখের বিষয় হলো দেশের অভ্যন্তরে কিছু অসাধু ব্যক্তি এই সুযোগ নিয়ে নিত্যপণ্যের অবৈধ মজুদ ও মূল্য বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।'

সেই অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অবৈধ মজুদ,বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রীকে উপদেষ্টা করে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, অবৈধ মজুদ ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের পদক্ষেপের পর কেউ অবৈধভাবে কোনো পণ্য মজুদ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।'

জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে রেমিট্যান্স ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি এসেছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে রেমিট্যান্স কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ‍জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ১৭ দশমিক ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম।

করোনা পূর্ববর্তী ৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের গড় রেমিট্যান্স প্রবাহের তুলনা করে সরকার প্রধান বলেন, 'চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স হ্রাস পেয়েছে না বলে বলা যেতে পারে রেমিট্যান্স প্রবাহ কোভিড পূর্ববর্তী স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে।'

Comments