রাজনীতি

ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর হামলায় অভিযুক্ত অস্ত্রধারী জুয়েল

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের ওপর হামলা চালিয়ে তার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হামলার পর অস্ত্র হাতে জুয়েলের এই দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের ওপর হামলা চালিয়ে তার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় চেয়ারম্যান পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। তখন ওই বাড়িতে থাকা নারীদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ জড়ো হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।

চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের অভিযোগ, স্থানীয় এক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়।

এদিকে এই ঘটনার পর অত্যাধুনিক অস্ত্র হাতে অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান জুয়েলের ২টি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এর একটি ছবিতে দেখা যায়, জুয়েল স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁর সামনে এক হাতে অস্ত্র ধরে সিগারেট টানছেন। আরেকটি ছবিতে একই অস্ত্র হাতে দৌঁড়ে যেতে দেখা যায় তাকে।

শ্রীপুর ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শাহজালাল মজুমদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপুরে পাশ্ববর্তী গোপালনগর গ্রাম থেকে দাওয়াত খেয়ে আসার পথে চিহ্নিত সন্ত্রাসী মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮ জন সন্ত্রাসী আমার গাড়ির গতিরোধ করে। এসময় প্রত্যেকের হাতেই হকিস্টিকসহ দেশি-বিদেশি অস্ত্র ছিল। আমার গাড়িতে আমি ও ড্রাইভার ছাড়া অন্য কেউ ছিল না।'

স্থানীয়দের ভাষ্য, হামলায় অভিযুক্ত জুয়েলের ভাই মোস্তফা নুরুজ্জামান খোকন একই ইউনিয়নের ২ বারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এক সময় জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সমর্থক হিসেবে জুয়েলের পরিচিতি থাকলেও তিনি এখন স্থানীয় সরকারদলীয় এক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ। এ ছাড়া জুয়েলের বিরুদ্ধে এর আগেও কয়েকবার ইউপি কার্যালয়ে তালা মেরে দেওয়াসহ চেয়ারম্যানের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য জুয়েলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া জুয়েল যে সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তার সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করেছে দ্য ডেইলি স্টার। কিন্তু তাকেও পাওয়া যায়নি।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভরঞ্জন চাকমা এই হামলার বিষয়ে বলেন, 'খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।'

'অস্ত্র হাতে জুয়েলের ভাইরাল হওয়া ছবির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অস্ত্রটি জুয়েলের নামে লাইসেন্স করা। এটি জার্মানিতে তৈরি একটি অত্যাধুনিক রাইফেল।'

লাইসেন্স করা হলেও জনসম্মুখে কেউ এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করতে পারেন কিনা- জানতে চাইলে ওসি আরও বলেন, 'বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।'

Comments