কোনো উসকানি ছাড়া পুলিশ সরাসরি গুলি করেছে: বিএনপি নেতা মোশাররফ

ভোলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
এবিএম মোশাররফ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ভোলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।

ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এই ছাত্রনেতা।

আজ রোববার দুপুর দেড়টার দিকে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় লোডশেডিং ও জ্বালানি তেলের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসুচি পালিত হচ্ছে। ভোলায় আমি ছিলাম। এখানে বিক্ষোভ শেষে একটি মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সেখানে পুলিশ তাদের মতো দায়িত্ব পালন করেছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। সমাবেশ শেষে আমাদের মিছিল করার কথা আগে থেকেই বলা ছিল। কিন্তু সমাবেশ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অতর্কিত হামলা করে।'

দ্য ডেইলি স্টারকে ভোলা সদর থানার ডিউটি অফিসার কবির হোসেন বলেন, 'বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পুলিশের ওপর হামলা করা হলে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।'

এই বিষয়ে এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, 'এমন কিছুই হয়নি। আমি মিছিলের একেবারে সামনে ছিলাম। আমাকেও তারা মেরেছে। এমন কেউ নেই যাকে মারেনি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের এমন অবস্থা করেছে যে সামনে যাওয়ার আর কোনো সুযোগই পাইনি।

পুলিশের হামলা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এখানে আমাদের প্রচুর নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। অন্তত ৩ থেকে ৪ হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। হয়তো এত উপস্থিতি দেখেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি করেছে।'

বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হওয়ার মুহূর্তেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে জানিয়ে তিনি বলেন, 'লাঠিচার্জের সঙ্গে তারা টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং সরাসরি গুলি করে। গুলিতে সেখানেই একজন মারা যান। তার নাম আব্দুর রহিম। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের ভোলা সদর থানা কমিটির সদস্য। আমাদের ভোলা ছাত্রদলের সভাপতির অবস্থাও খুবই খারাপ, আল্লাহ জানেন কী হয়। এ ছাড়াও, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকসহ আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ ছররা গুলি চালিয়েছে, শতাধিক নেতা-কর্মীর গুলি লেগেছে।'

'পুলিশ কেন এভাবে হামলা করল বা গুলি চালালো আমি জানি না। এভাবে কোনো উসকানি ছাড়া সরাসরি গুলি চালাতে আমি কখনো দেখিনি। এমনকি ঢাকাতেও কখনো এভাবে গুলি করতে দেখিনি,' যোগ করেন এবিএম মোশাররফ হোসেন।

এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি ছিল কি না জানতে চাইলে ভোলা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ট্রুমেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে তারা নানাভাবে হয়রানি করে। স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম, আমরা সমাবেশ করব এবং মিছিল নিয়ে কয়েকশ গজ যাব। তারা আমাদের মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছিলেন। আমরা পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ শেষ করে মিছিল নিয়ে বের হব, সেই সময় অতর্কিত হামলা চালায় পুলিশ। তারা সরাসরি আমাদের ওপর গুলি চালায়।'

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।

Comments