'বিএনপি যদি পতিত দল হয়ে থাকে তাহলে এতো ভয় কেন আপনাদের?'

সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যশোর যুব দল নেতা বদিউজ্জামান ধনি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, 'বহু খুন, হত্যা দেখেছি, আর আমরা তা দেখতে চাই না। এবার প্রতিরোধ হবে, প্রতিবাদ হবে।'
মির্জা আব্বাস বলেন, 'সরকারকে আর কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আপনারা এখন প্রস্তুতি নিন এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এক বদিউজ্জামান ধনির হত্যার বিচার করে লক্ষ মানুষের হত্যার বিচার করা যাবে না এই সরকারের পতন না করা পর্যন্ত।'
জাতীয়তাবাদী যুব দল মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
গত ১২ জুলাই যশোর শহরের বেজপাড়া চোপদারপাড়া এলাকার যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
মির্জা আব্বাস বলেন, 'আজকে বদিউজ্জামান ধনির খুনকে সরকার বিএনপির ওপর চালান করতে চাচ্ছে। যে এটা অভ্যন্তরীন কোন্দল।'
'আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা কোনো অভ্যন্তরীণ কোন্দল নয়। এই হত্যাকাণ্ড আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে এবং একের পর এক হত্যা করে বিএনপি কর্মীদের ভয় পাইয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা বদিজ্জামান ধনি হত্যার বিচার আশা করছি। যদি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয় বিএনপি এর বিচার করবে।'
মির্জা আব্বাস বলেন, 'পত্রিকায় আজকে আসছে- বিএনপি নাকি একটি পতিত দল। যিনি (ওবায়দুল কাদের) পতিত দল বলেছেন, তার সম্পর্কে দুই-একটা কথা না বললেই নয়। একসঙ্গে (১/১১ সময়কাল) জেলে ছিলাম। সারাদিন জেলখানায় প্রায় কান্নাকাটি করতেন। আর ওই সময়ে অনেকের সামনেই কান ধরে বললেন, "আমি জীবনে আর রাজনীতি করমু না"। আজকে উনার মুখ থেকে বেরিয়েছে পতিত দল…। উনার সম্পর্কে কথা হয়েছে কাউয়া কাদের.. তার মুখ থেকে বের হয়েছে পতিত দল কথা যার অর্থ আমি বুঝতে পারিনি।'
'আামি বলব, বিএনপি যদি পতিত দল হয়ে থাকে তাহলে এতো ভয় কেন আপনাদের? আমাদেরকে মিছিল-মিটিং করতে দেন না। একটা পতিত দল মিছিল করবে, মিটিং করবে আপনাদের ভয়ের কী আছে?'
তিনি বলেন, 'কিন্তু যদি আপনার নেত্রী (আওয়ামী লীগ) বা কাউয়া কাদেররা কোনো রকমে ভাইগা যায়-অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? এই আওয়ামী লীগকে খুঁজে পাওযা যাবে না। এই কাদের সাহেবই বলেছেন তাদের কোনো এক মিটিংয়ে যে, যা কিছু কামাইছেন কিছুই কিন্তু থাকবে না, সব টাকা পয়সা বালতি-ঘটি ফেইলা দেশ থেকে পালাইতে হইবো।'
মির্জা আব্বাস বলেন, 'আমরা বলেছি, নিরপেক্ষ সরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার। এরকম একটা সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব। ওই সময় পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন না, নিরপেক্ষ সরকার আসবে, তাদের অধীনে নির্বাচনে যাব।'
'মানুষ আপনাদেরকে ভোট দেয় ইনশাল্লাহ আমরাও আপনাদের মেনে নেবো। কিন্তু যদি কারচুপি করে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোট হয়..। ইভিএম চিনি না আমরা, ইভিএম বুঝি না আমরা, দরকার নাই এর। বিএনপি আপনাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে না-এটাই ঠিক,' বলেন মির্জা আব্বাস।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'আমাদের কথা বলার সময় নাই। উই শুড গো ফর ডাইরেক্ট অ্যাকশন।'
মহানগর উত্তর যু্ব দলের আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মিল্টনের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল ও দক্ষিণের খন্দকার এনামুল হক এনামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাইফুল আলম নিরব, যুব দলের সভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, মহানগর বিএনপির আমিনুল হকসব অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
Comments