র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষতি করবে না: মার্কিন রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি করবে না। আমাদের গভীর সম্পর্ক আছে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অভিন্ন মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশ এগিয়ে যাবে এবং একসঙ্গে কাজ করবে।
ছবি: মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুকে পেজের ভিডিও থেকে নেওয়া।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি করবে না। আমাদের গভীর সম্পর্ক আছে এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অভিন্ন মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশ এগিয়ে যাবে এবং একসঙ্গে কাজ করবে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় দূতাবাসের ফেসবুক পেজে আপলোড করা ভিডিওতে তিনি বলেন, '... অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, এটা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষতি করবে কিনা। উত্তরে শুধু বলি, আমি মনে করি না এমনটি হবে।'

তিনি বলেন, 'কিন্তু আমাদের সম্পর্কে অন্যান্য দ্বন্দ্ব আছে। কিন্তু, তাদের সঙ্গে আমাদের বিস্তৃত এবং গভীর সম্পর্ক আছে। তবে, র‌্যাব এবং অন্য সব দিক থেকে আমাদের করণীয় হলো বসা ও কথা বলা এবং এই সমস্যা সমাধানে কী করতে হবে তা ঠিক করা।'

গত বছর ওয়াশিংটন ব্যাব এবং এর বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সন্ত্রাস দমন এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে। তারা বিচার বিভাগ, প্রসিকিউটর, পুলিশকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে যা অব্যাহত থাকবে এবং আরও বিস্তৃত হবে। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বাংলাদেশ কতটা বিস্মিত হয়েছিল, তা আমরা অনেকবার জেনেছি।

'আমরা বিস্মিত হয়েছি যে তারা অবাক হয়েছে। কারণ ইতোমধ্যে ২০১৮ সালে মানবাধিকার নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কারণে আমরা র‌্যাবের প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। বেশ কয়েক বছর ধরে আমাদের মানবাধিকার প্রতিবেদনে উদ্বেগে প্রকাশ করেছি। আমরা তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেছি। তাই যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো বিস্ময় করার মতো হলেও আমাদের যে উদ্বেগ ছিল সেটি নিয়ে বিস্ময় থাকার কথা নয়,' বলেন তিনি।

পিটার হাস বলেন, গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রও নিখুঁত নয়, তবে গণতন্ত্রের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন কিছু বিষয় আছে যা নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারও কাজ করতে পারে এবং এজন্য নির্বাচন একটি ভালো অবকাঠামো। কারণ তাদের এখনো এক বছরেরও বেশি সময় বাকি আছে।

তিনি আরও বলেন, আমি এটাও স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পছন্দ নেই। আমাদের কোনো ভোট নেই। আমরা কোনো নির্দিষ্ট দল, বা প্ল্যাটফর্ম বা অন্য কোনো কিছুর পক্ষে নই। এটা আমাদের কাজ নই। কিন্তু আমরা যা দেখতে চাই তা হলো- আমি মনে করি সব বাংলাদেশিই তা দেখতে চান, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিচালিত একটি নির্বাচন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণকে সহিংসতামুক্ত ও জবরদস্তিমুক্ত একটি উন্মুক্ত, প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ায় তাদের পরবর্তী নেতা নির্বাচনের সুযোগ পাবে।

তিনি বলেন, 'পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে। আমি মনে করি এটি ক্রিটিকাল। কিন্তু, নির্বাচন আসলে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তাই আসন্ন নির্বাচনের কোনো দিকটিতে অংশ নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তে সবাই যাতে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করে তা নিশ্চিত করতে এখন থেকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।'

Comments