‘৮ বছর এখানে ছিলাম’

আজ বুধবার রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১ এর গোপন কারাগার ‘আয়নাঘর’ এর সামনে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম আরমান | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

'মাঝে মাঝে ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখতো। উঠতে দিতো না, দাঁড়াতে দিতো না। কেন (বসিয়ে রেখেছেন) প্রশ্ন করলে বলতো, স্যার আসবেন'—এভাবে আয়নাঘরে কাটানো সময়ের বর্ণনা দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম আরমান।

আজ বুধবার রাজধানীর তিনটি এলাকায় র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের 'আয়নাঘর' পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় উপদেষ্টা।

রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১ এর আয়নাঘর পরিদর্শনের সময় আহমাদ বিন কাসেম উপস্থিত ছিলেন।

হাতের ইশারায় একটি ঘর দেখিয়ে তিনি বলেন—'এখানে আমাকে আট বছর বন্দি করে রাখা হয়েছিল। দিনের বেলা চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে রাখতো। রাতের বেলা পিছমোড়া করে বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে রাখতো। কেন জানতে চাইলে তারা কিছু বলতো না। নামাজের সময় পর্যন্ত দিত না। আট বছর ধরে তারা আমাকে নারকীয় অভিজ্ঞতা দিয়েছে।'

ব্যারিস্টার আহমাদ বিন কাসেম আরমান | ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি বলেন, 'আমি রোগা ছিলাম। মাঝে মাঝে টাফ হয়ে যেত। এ রকম হতো যে, ২৪ ঘণ্টা চোখ বেঁধে, হাত বেঁধে বসিয়ে রাখতো। উঠতে দিতো না, দাঁড়াতে দিতো না। কেন প্রশ্ন করলে বলতো, স্যার আসবেন। চোখ বাঁধা অবস্থায় দেয়ালের দিকে ফিরে বসে থাকতাম। বুঝতে পারতাম পেছন থেকে কেউ আসছে, মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজ হচ্ছে। দামি পারফিউমের ঘ্রাণ পেতাম...এখানে তো প্রস্রাব-পায়খানার গন্ধ নাকে আসতো। বুঝতাম সিনিয়র কেউ পেছন থেকে দেখছে।'

ড. ইউনূস জানতে চান, ছাড়লো কখন? আরমান বলেন, 'আমি পরে যেটা বুঝতে পারলাম ৬ তারিখ (আগস্ট) ভোরে। ৫ তারিখ পালালো, ৬ তারিখ ভোরে আমাদের ছেড়ে দিলো।'

'যখন আমাকে বের করে, আমি মনে করেছিলাম আমাকে মেরে ফেলবে,' যোগ করেন তিনি।

আহমাদ বিন কাসেম একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, শেখ হাসিনার নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট তাকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং আট বছর গোপন কারাগারে আটকে রাখে।

Comments

The Daily Star  | English

Wait for justice: 21 years and counting

The final judgment in the cases is now pending with the Appellate Division as trial proceedings have been completed at the lower court and HC Division

11h ago