জ্বালানি ও নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে জেদ্দায় বাইডেন

স্টার অনলাইন ডেস্ক
জেরুজালেমে এক অনুষ্ঠানে জো বাইডেন
জেরুজালেমে এক অনুষ্ঠানে জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

জ্বালানি সরবরাহ, মানবাধিকার ও নিরাপত্তা বিষয়ক পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারে সৌদি আরবের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক 'নজিরবিহীন' সফরে আজ শুক্রবার জেদ্দার উদ্দেশ্যে ইসরায়েল থেকে রওনা হয়েছেন।

এ বিষয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের সঙ্গে মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্দেশ্য নিয়ে সৌদি আরব যাচ্ছেন বাইডেন।

বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি আরবের রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, ২০১৮ সালে ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক জামাল খাশোগিকে হত্যার অনুমোদন দেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তবে সৌদি রাজপুত্র ও দেশটির ডি-ফ্যাকটো শাসক সালমান এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

খাশোগি হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে এর আগে বাইডেন বলেছিলেন, তিনি সারা বিশ্বের কাছে সৌদি আরবকে 'অচ্ছুৎ' বানাবেন।

আগামীকাল শনিবার বাইডেন জেদ্দায় একটি বৃহত্তর সম্মেলনে অন্যান্য আরব নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।

বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের শুরুতে কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা হিসেবে কারও সঙ্গে হাত মেলাবেন না এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন।

তবে ইসরায়েলে তিনি সবার সঙ্গেই প্রয়োজন অনুযায়ী করমর্দন করেন।

বাইডেন বৃহস্পতিবার আবারও জানান, খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে দেশটির অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

বাইডেন জানান, তিনি সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন করবেন। তবে খাশোগির হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তিনি কীভাবে আরব নেতাদের কাছে উত্থাপন করবেন, সেটা জানাননি।

বিশ্লেষকদের মতে, জ্বালানি ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট স্বার্থে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও তার সহযোগীরা বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশ সৌদি আরবকে একঘরে করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। বিশেষত যখন দেশটি রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে সৌদি আরব ও তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের অংশীদাররা আরও বেশি পরিমাণে তেল উত্তোলন করে জ্বালানি গ্যাসের দাম কমাবে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গত ৪ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতির সমস্যা কিছুটা হলেও কমে আসবে।

মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, বাইডেনের আলোচনায় ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি, জ্বালানি বাজারে 'ভারসাম্য' আনা এবং ৫জি ও ৬জি বিষয়ে প্রযুক্তিগত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তিতে সাক্ষর করেন। এই চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্প বন্ধ করার বিষয়ে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে দেশ দুটি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে জো বাইদেন। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদের সঙ্গে জো বাইদেন। ছবি: রয়টার্স

প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন সরাসরি ইসরায়েল থেকে জেদ্দায় যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউজের মতে, এই উদ্যোগ ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সম্পর্কের বরফ গলার একটি 'ছোট নিদর্শন'।

বাইডেনের সফরের আগে সৌদি আরব জানায়, তারা সব উড়োজাহাজ সংস্থার জন্য তাদের আকাশপথ উন্মুক্ত করে দেবে, যাতে ইসরায়েল থেকে আরও ফ্লাইট আসাযাওয়া করতে পারে।

এই উদ্যোগকে ওয়াশিংটন স্বাগত জানায়। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই উদ্যোগে মধ্যপ্রাচ্যে আরও সমন্বিত, স্থিতিশীল ও নিরাপদ পরিস্থিতি সৃষ্টির পথ উন্মোচন হয়েছে।

ইতোমধ্যে করোনা মহামারি ও প্রতিবেশী ইউক্রেনে পরাশক্তি রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী চলমান খাদ্য ও জ্বালানি সংকট থেকে নিজেদের রক্ষায় 'আইটুইউটু' নামে খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা জোট গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র প্রধানরা খাদ্য ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন

 

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago