শত বছরের পুরনো সারিন্দার প্রদর্শনী ময়মনসিংহে

ময়মনসিংহে চলছে শত বছরের পুরনো সারিন্দা। ছবি: স্টার

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহে ৩ দিন ধরে চলছে কয়েক শ বছরের পুরনো ১২টি সারিন্দার প্রদর্শনী।

আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য খোলা থাকবে।

'এশিয়ান মিউজিক মিউজিয়াম' প্রদর্শনীটি নগরীর কাঁচিঝুলিতে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ ভবনে আয়োজন করেছে।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে রেজাউল করিম আসলামের সংগৃহীত কয়েক শ বছরের পুরনো সারিন্দা। সেগুলো ১৭ থেকে ১৯ শতাব্দী মধ্যবর্তী সময়ের বলে দাবি করেছেন বাদ্যযন্ত্র ও লোকজ সংস্কৃতি সংগ্রাহক রেজাউল করিম আসলাম।

তিনি আরও দাবি করে, কুড়িগ্রামের রহমান ফকিরের (৭৫) কাছ থেকে পাওয়া ৩৬৫ বছরের পুরনো সারিন্দা, লালমনিরহাটের গুণধর বাবুর কাছ থেকে পাওয়া প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো সারিন্দা ও মনা সাধুর কাছ থেকে পাওয়া প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো সারিন্দা প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।

এ ছাড়াও, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের নাও ভাঙার চরের মোক্তার হোসেন ফকিরের (৫১) কাছ থেকে পাওয়া ৪ প্রজন্মের ব্যবহৃত ২০০ বছরের পুরনো সারিন্দা এখানে রয়েছে। এটি ব্যবহার করতেন মোক্তার ফকিরের বাবা রমজান আলী ফকির।

হালুয়াঘাট থেকে কীর্তিনিয়া মণীন্দ্র ওস্তাদজীর ব্যবহৃত ১৫০ বছরে পুরনো সারিন্দার ছাড়াও বিলুপ্তপ্রায় ও টিকে থাকা বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র এ প্রদর্শনীতে রয়েছে।

ছবি: স্টার

প্রজন্ম ও বংশ পরম্পরা হিসাব করে এগুলোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে ডেইলি স্টারকে জানান আসলাম।

এ আয়োজনে আরও রয়েছে পুঁথি পাঠ, বাউল বৈঠক, শিশুদের সংগীত ও যন্ত্রসংগীত পরিবেশনা।

প্রদর্শনীর সহোযোগিতায় রয়েছে নোভিস ফাউন্ডেশন ও ময়মনসিংহ বাউল সমিতি। আয়োজনের সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছেন শিল্পী জয়িতা অর্পা ও শৈল্পিক নির্দেশনায় আছেন জাওয়াতা আফনান।

সংগ্রাহক রেজাউল করিম আসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারক, বাদক ও উপকরণ সবই হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় সারিন্দা খুবই মূল্যবান ছিল। যারা সারিন্দা বাজাতেন তারা মরমী কবি ছিলেন।'

'শত শত বছরের পুরনো বাদ্যযন্ত্রগুলো হারানো বা নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য এই উদ্যোগ। এসব সারিন্দা কারো রান্নাঘর বা কারো গোয়ালঘরে পাওয়া গেছে। যাদের কাছে পাওয়া গেছে তারা জানতেন না এর ঐতিহাসিক বা ঐতিহ্যগত মূল্য কত,' যোগ করেন তিনি।

আসলামের সংগ্রহে বিলুপ্ত, বিলুপ্তপ্রায় ও টিকে থাকা প্রায় ৬০০ বাদ্যযন্ত্র রয়েছে। তার পরিবার ৩ প্রজন্ম ধরে বাদ্যযন্ত্র ব্যবসায় জড়িত। ময়মনসিংহ নগরীর দূর্গাবাড়ি সড়কে আসলামের 'নবাব অ্যান্ড কোং' নামে বাদ্যযন্ত্রের দোকান রয়েছে।

১৯৪৪ সালে তার দাদা নবাব আলী বাদ্যযন্ত্রের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর আসলামের বাবা জালাল উদ্দিন ব্যবসার হাল ধরেন।

২০০৬ সাল থেকে আসলামের দুর্লভ বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ শুরু। তিনি এসব নিয়ে গবেষণাও করছেন। হারিয়ে যাওয়া বাদ্যযন্ত্রগুলোর আদল ঠিক রেখে নতুন করে তা তৈরির কাজও করছেন তিনি।

বাউলশিল্পী সুনীল কর্মকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের লোকজ সম্পদ ও লোকজ ঐতিহ্য রক্ষায় এ ধরনের আয়োজন খুবই প্রয়োজন। হারিয়ে যাওয়া বাদ্যযন্ত্রগুলোকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি তাদেরকে উৎসাহিত করবে এমন প্রদর্শনী।'

Comments

The Daily Star  | English

Stocks fall on poor performance of large companies

Indexes of the stock market in Bangladesh declined yesterday on rising the day before, largely due to the poor performance of Islami Bank Bangladesh along with the large-cap and blue-chip shares amid sales pressures..Large-cap refers to shares which account for large amounts in market capi

1h ago