নারায়ণগঞ্জ

বাউল গান বন্ধ করে বাদ্যযন্ত্র জব্দ, থানায় ‘সাদা কাগজে’ মুচলেকা নিয়ে ফেরত

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউল গানের আসর বন্ধ করে সেখান থেকে বাদ্যযন্ত্র জব্দ করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ বাউল সমিতির ফতুল্লা শাখার সভাপতি দেওয়ান রাসেল প্রধান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ফতুল্লার কড়ইতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ সন্ধ্যায় মুচলেকা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রগুলো ফেরত আনা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনূর আলমের নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাদ্যযন্ত্রগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে যান।

ওসির দাবি, 'বাউল গানের আড়ালে সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে এবং মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের আড্ডা হয়—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।'

বাউল শিল্পী দেওয়ান রাসেল বলেন, 'আমরা বাউল চর্চা কেন্দ্রে বাউলদের নিয়ে গান করছিলাম। তখন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি ফোর্স নিয়ে সেখানে আসেন। তিনি আমাদের গান বন্ধ করে দিয়ে সংগঠনের ঢোল, হারমোনিয়াম, প্যাড, ড্রাম জব্দ করে নিয়ে যান।'

তিনি বলেন, 'আমরা ওসির কাছে জানতে চাই, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? তিনি জানান, রাতে বাউল গানের আসর বসায় সড়কে চুরি, ছিনতাই ও মাদকসেবীদের উৎপাত বেড়েছে। দিনভর গান করা যাবে, কিন্তু রাতে না।'

'অনেক মিনতির পরও তারা আমাদের বাদ্যযন্ত্র ফিরিয়ে না দিয়ে থানায় নিয়ে যান। পরে বুধবার সন্ধ্যায় থানায় গিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা দিয়ে বাদ্যযন্ত্রগুলো ফিরিয়ে আনি,' যোগ করেন তিনি।

জানতে চাইলে ওসি শাহীনূর বলেন, 'বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে আমরা জেনেছি, রাত ২-৩টা পর্যন্ত বাউল গানের নামে অসামাজিক কার্যক্রম চলে। চোর, ছিনতাইকারীসহ অপরাধীরা সেখানে বসে থাকে, পরে সুবিধামতো সময়ে অপরাধ সংঘটিত করে।'

ওসি বলেন, 'আমরা তাদের বলেছি, বাউল গান নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বলেছিলাম, যদি নিশ্চয়তা দিতে পারে যে আসরে কোনো চোর-ছিনতাইকারী যাবে না, তাহলে গানের আসর চলতে পারে। তারা তখন বলেন, এই নিশ্চয়তা তারা দিতে পারবেন না। এ জন্য তাদের গানের আসর বন্ধ রাখতে বলেছি। আমরা বাদ্যযন্ত্র জব্দ করিনি। থানায় নিয়ে এসেছিলাম, পরে দিয়ে দিয়েছি।'

জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, 'বাউল গানের আসর নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বাউল গানের আসর বন্ধের পক্ষে নই। কিন্তু এটিকে কেন্দ্র করে কোনো পাবলিক নুইসেন্স যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে আয়োজকদের বলেছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Tk 2,956 crore earmarked for Election Commission

Of this amount, Tk 2,727 crore has been allocated as revenue budget, while Tk 229 crore was allocated as development budget

48m ago