কবি ও কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক আলাউদ্দিন আল আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালে আজকের দিনে তিনি মারা যান তিনি।
আলাউদ্দিন আল আজাদ। ছবি: সংগৃহীত

কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক আলাউদ্দিন আল আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৯ সালে আজকের দিনে তিনি মারা যান তিনি।

তার প্রথম উপন্যাস 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র' ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৭ সালে উপন্যাসটি চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়। ছবিটির শিরোনাম ছিল 'বসুন্ধরা', পরিচালনায় ছিলেন সুভাষ দত্ত। উপন্যাসটি বেশ কয়েকটি ভাষায় অনূদিত হয়। বুলগেরীয় ভাষায় এটি অনূদিত হয়েছে "পোত্রেৎ দুবাতসাৎ ত্রি" শিরোনামে।

আশাবাদ ও সংগ্রামী মনোভাব আলাউদ্দিন আল আজাদের রচনার বৈশিষ্ট্য। তিনি ছিলেন ভাষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী।

১৯৩২ সালের ৬ মে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আলাউদ্দিন আল আজাদ। তার বাবার নাম গাজী আব্দুস সোবহান ও মা মোসাম্মাৎ আমেনা খাতুন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর বিভিন্ন সরকারি কলেজে অধ্যাপনায় যুক্ত হন। তিনি নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজ (১৯৫৫), ঢাকা জগন্নাথ কলেজ (১৯৫৬-৬১), সিলেট এমসি কলেজ (১৯৬২-৬৮) ও চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে (১৯৬৪-৬৭) অধ্যাপনা করেন। 

আলাউদ্দিন আল আজাদ ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন ১ বছর (১৯৭৪-৭৫)। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। পেশাগত জীবনে তিনি মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাসে সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। 

১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ঈশ্বরগুপ্তের জীবন ও কবিতা বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন আলাউদ্দিন আল আজাদ। তার বহুল পঠিত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে- 'তেইশ নম্বর তৈলচিত্র', 'শীতের শেষরাত বসন্তের প্রথম দিন', 'কর্ণফুলী', 'যেখানে দাঁড়িয়ে আছি', 'অপর যোদ্ধারা', প্রভৃতি।

আলাউদ্দিন আল আজাদ ছিলেন বাস্তব জীবনের রূপকার। বাস্তবতার রূপ নিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন তার সাহিত্যর ভাষা। বলা যায় সংস্কৃতাশ্রয়ী শব্দ তিনি পরিহার করেছেন। তিনি প্রধানত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সমাজের রূপকার। তার গল্প নাতিদীর্ঘ, কিন্তু আগ্রহ তৈরি করে।

ভাষা আন্দোলনে সরাসরি অংশ নেন বাংলা সাহিত্যের মননশীল এই লেখক। একুশের রক্তাক্ত ঘটনার পর তারই উদ্যোগে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় একুশের বুলেটিন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা নিয়ে রচিত 'ফেরারি ডায়েরি' সমকালীন ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দলিল। 

এই ভাষা সংগ্রামী তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আবুল কালাম শামসুদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার ও একুশে পদক।

Comments