৫৮ দেশে ৬ হাজারের বেশি মাঙ্কিপক্স রোগী, জরুরি বৈঠকে বসবে ডব্লিউএইচও

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বের ৫৮টি দেশে ৬ হাজারের বেশি জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে।
ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস। ছবি: রয়টার্স

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে,  বিশ্বের ৫৮টি দেশে ৬ হাজারের বেশি জনের মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে।

আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া সপ্তাহে বা তারও আগে এ বিষয়ে আবারও জরুরি বৈঠকে বসবে ডব্লিউএইচওর একটি কমিটি।

মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবকে জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা হিসেবে ঘোষণা করা হবে কি না, বৈঠকে সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে। জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা ডব্লিউএইচওর সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কবার্তা।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বুধবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এর আগে গত ২৭ জুন ডব্লিউএইচওর কমিটি এ সংক্রান্ত বৈঠকে বসে। মাঙ্কিপক্স তখনও জনস্বাস্থ্যের জন্য বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণার অবস্থায় যায়নি বলে ওই বৈঠকে একমত হন কমিটির সদস্যরা। 

বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক বলেন, 'আমি সারা বিশ্বে ভাইরাসটির মাত্রা ও বিস্তার নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছি।'

পরীক্ষা না হওয়ায় অনেক আক্রান্ত হিসেবের বাইরে থেকে যাচ্ছেন বলে ধারণা করছেন তিনি।

৮০ শতাংশের বেশি মাঙ্কিপক্স ইউরোপে শনাক্ত হয়েছে বলে জানান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।

মাঙ্কিপক্স এমন একটি ভাইরাস, যা প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হয়। এর উপসর্গ গুটিবসন্তের মতো হলেও ক্লিনিক্যালি কম গুরুতর।

এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তদের বেশিরভাগ কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে, কিছু ক্ষেত্রে মাঙ্কিপক্স মারাত্মক হতে পারে। যদিও তা বিরল।

মাঙ্কিপক্সের আক্রান্ত ব্যক্তিদের উপসর্গের মধ্যে আছে- মুখ ও হাতের তালুতে ক্ষত বা গুটি, খোসপাঁচড়া, জ্বর, পেশীতে ব্যথা এবং ঠাণ্ডা লাগা।

এএফপির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭০ সালে জায়েরে (বর্তমানে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র) মানুষের প্রথম মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়। তখন সেখানের একটি অঞ্চলের ৯ বছর বয়সী ছেলের মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া যায়।

২০০৩ সালের বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ শনাক্ত হয়, যা ছিল প্রথমবারের মতো আফ্রিকার বাইরে কোনো দেশে এই রোগের সংক্রমণ।

এএফপি বলছে, এই রোগের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। তবে, গুটিবসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে প্রায় ৮৫ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

কিন্তু, গুটিবসন্তের ভ্যাকসিনের সরবরাহ এখন সীমিত। কারণ বিশ্বব্যাপী এই রোগটি নির্মূল হয়েছে।

এপিডেমিওলজিস্ট এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এরিক ফিগল-ডিং বলেন, ভালো খবর হচ্ছে গুটিবসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। কিন্তু, দুঃসংবাদ হলো ৪৫ বছরের কম বয়সী বেশিরভাগ মানুষের গুটিবসন্তের টিকা দেওয়া নেই।

Comments